অবৈধ স্থাপনা রক্ষায় অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ শীর্ষ আ. লীগ নেতারা

প্রকাশিত: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০১৬

অবৈধ স্থাপনা রক্ষায় অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ শীর্ষ আ. লীগ নেতারা

abul mal awe sylতারাপুর চা বাগান দখল করে গড়ে ওঠা রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ রক্ষায় এবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দ্বারস্থ হয়েছেন সিলেটের শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারা।  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭ টায় ঢাকার হেয়ার রোডস্থ অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে উপস্থিত হয়ে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এই মেডিকেল কলেজ রক্ষার দাবি জানান।

যদি সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেওয়া এক রায়ে তারাপুর চা বাগান দখল করে গড়ে ওঠা মেডিকেল কলেজসহ সকল স্থাপনাকে অবৈধ ঘোষণা করে ছয় মাসের মধ্য তা অপসারণের নির্দেশ দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভবন মালিকরা স্থাপনা অপসারণ না করলে জেলা প্রশাসককে স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের নির্দেশ দেন আপীল বিভাগ।

তবে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে একটি স্থাপনাও অপসারণ করা হয়নি। এদিকে আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় আন্দোলনে নামে কলেজটির শিক্ষার্থীরা ও সুফলভোগীরা। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকেও এসব আন্দোলনে দেখা যায়। এবার সিলেটের শীর্ষ নেতারাও প্রকাশ্যে এই অবৈধ স্থাপনা রক্ষায় তৎপর হলেন।

বৃহস্পতিবার রাতের বৈঠকে মানবিক কারণে যেকোনো উপায়ে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ রক্ষার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান সিলেট আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. একে আবদুল মোমেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী, কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন’র সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. একে এম হাফিজ ও রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল জলিল।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ও প্রায় ১৫ শ’ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ও সিলেটের মানুষের চিকিৎসাসেবার দিকটি চিন্তা করে মানবিক ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রীর কাছে।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনিও বিষয়টি অবগত আছেন। তার চিন্তায়ও আছে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের কথা।

এসময় মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং সিলেটবাসীর দাবি রক্ষায় তিনি পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের আপীল বিভাগ তারাপুর চা বাগান শিল্পপতি রাগীব আলীর দখল থেকে উদ্ধারের রায় দেন। এছাড়া তারাপুর চা বাগানে নির্মিত সব অবকাঠামো ৬ মাসের মধ্যে অপসারণ করে সে জায়গায় চা বাগান করার আদেশ দেন আপীল বিভাগ। রাগীব আলী গং অবকাঠামো অপসারণে করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা নিয়ে স্থাপনা অপসারণের কথাও উল্লেখ করা হয় রায়ে। তবে এ খাতে ব্যয় হওয়া অর্থ জেলা প্রশাসক রিট আবেদনকারীদের (রাগীব আলীর ছেলে) কাছ থেকে গ্রহণ করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

তবে গত ১৭ জুলাই ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার অভিযান শুরু হয়নি। ২২ জুলাই সিলেট জেলা প্রশাসক জয়নুল আবেদিন অবৈধ স্থাপনা সরাতে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে  নোটিশ দেন। সেই সময়ও অতিবাহিত হবার পর ওইদিন বৈঠক করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নেয়ার কথা জানানো হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল