সিলেট ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৪, ২০১৬
রাগীব আলীর জালিয়াতির মাধ্যমে দখলকৃত দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধভাবে নির্মিত রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থাপনা রক্ষার দাবিতে এবার আন্দোলনে নেমেছেন আওয়ামীলীগ নেতারা।
রাগীব আলীর কাছ থেকে তারাপুর চা বাগান দখল মুক্ত করার দিনও তারা প্রশাসনের সাথে ছিলেন। আদালতের রায় অনুযায়ী তখন কেবল চা-বাগান দখল মুক্ত করে অবৈধ স্থাপনা সরাতে ছয় মাস সময় দেয়া হয়। কিন্তু ছয় মাস পার হবার পর এখন ওই এলাকার অবৈধ স্থাপনা রক্ষার দাবির আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা।
‘আমরা সিলেটবাসী’ ব্যানারে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অবৈধ স্থাপনা রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী নেতারা হলেন সিটি কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ। দুজনেই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। তাদের সাথে একই আন্দোলনে আছেন টুকেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুশ শহিদও । তাদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে ওই এলাকায় জগদীশ চন্দ্র দাশ ও ইলিয়াছুর রহমানের মালিকানাধীন একাধিক ফার্মেসি রয়েছে। এই ফার্মেসিগুলোও অবৈধ স্থাপনা হিসেবে আদালতের রায়ে চিহ্নিত।
অবৈধ স্থাপনা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনের পর বুধবার(৩ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভেতরই মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
কেন তাদের অবস্থান বদল জানতে চেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সিটি কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ ফোন ধরেননি। তবে সাবেক সিটি কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশকে বলেন, ” আমরা অবস্থান বদলাইনি। আদালত খুব সুন্দর রায় দিয়েছেন, সেবায়েত পঙ্কজ গুপ্তকে বাগানের দখল বুঝিয়ে দেয়ার দিনও আমি সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলাম তবে যেহেতু আমরা জনপ্রতিনিধি তাই স্থানীয় এলাকাবাসীর স্বার্থও দেখতে হয়”।
আদালতে চূড়ান্ত রায়ের পর কার কাছে দাবি জানাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” স্থানীয় এমপি মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেডিকেল কলেজ রক্ষার আহবান করছি, যদি কোন ফাঁকফোকর থাকে আরকি।”
আদালতে রায় না মানলে আদালত অবমাননা হয় স্বীকার করে তিনি বলেন, ” ছয় মাসে তো প্রশাসন উদ্যোগ নেয়নি তাই এলাকাবাসী জড়ো হয়েছে আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি মাত্র। আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে।”
মূলত শিক্ষার্থী ও ওই মেডিকেলে কর্মরতদের জন্য কর্মসূচি পালন করছেন জানিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা জগদীশ বলেন , “আমরা কেবল মেডিকেল কলেজ রক্ষার জন্য আহবান জানিয়েছি। যে কারো নামে সেটা বহাল থাকতে পারে। এই জায়গার বর্তমান মালিক পঙ্কজ বাবুর নামেও সেটা হলে সমস্যা নেই।”
এ ব্যাপারে তারাপুর চা-বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত কে বলেন, “আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আন্দোলন করা বেআইনি। এটা আদালত অবমাননার সামিল। আন্দোলনকারীরা তাই করছেন। রায় পছন্দ না হলে তারা আদালতে আবেদন জানাতে পারেন, আন্দোলন নয়।”
অনুসন্ধানে দেখা গেছে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে স্থাপনা সরাতে ছয় মাস সময় দেয়া হলেও ওই সময়ের মধ্যে তাদের কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। বরং অবৈধভাবেই ভবনের নতুন আরও উন্নয়ন কাজ চালানো হয়।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নোটিশ জারির পর প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের একাংশও অবৈধ স্থাপনা রক্ষায় আন্দোলনে মাঠে রয়েছেন।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের আপীল বিভাগ তারাপুর চা বাগান শিল্পপতি রাগীব আলীর দখল থেকে উদ্ধারের রায় দেন। এছাড়া তারাপুর চা বাগানে নির্মিত সব অবকাঠামো ৬ মাসের মধ্যে অপসারণ করে সে জায়গায় চা বাগান করার আদেশ দেন আপীল বিভাগ। রাগীব আলী গং অবকাঠামো অপসারণে করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা নিয়ে স্থাপনা অপসারণের কথাও উল্লেখ করা হয় রায়ে। তবে এ খাতে ব্যয় হওয়া অর্থ জেলা প্রশাসক রিট আবেদনকারীদের (রাগীব আলীর ছেলে) কাছ থেকে গ্রহণ করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
তবে গত ১৭ জুলাই ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার অভিযান শুরু হয়নি। ২২ জুলাই সিলেট জেলা প্রসাশক জয়নুল আবেদিন অবৈধ স্থাপনা সরাতে রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে নোটিশ দেন। সেই সময়ও অতিবাহিত হবার পর ওইদিন বৈঠক করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নেয়ার কথা জানানো হয়।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd