আজও এম ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন সিলেটবাসী

প্রকাশিত: ৫:০৮ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০১৬

আজও এম ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন সিলেটবাসী

DSC_0131সিলেট বিএনপি আর আগের অবস্থানে নেই। নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সাথেও যেনো হারিয়ে গেছে সিলেটে বিএনপির অবস্থান। এক সময় সিলেটের রাজপথে জোরালো অবস্থান ছিল বিএনপির।
বিএনপির জোরালো অবস্থানের কাছে অন্যদলগুলো যেনো অসহায় ছিল। বিএনপিকে সমীহ করেই রাজপথে নামতে হতো অন্যদল গুলোকে। এখন সিলেটে খেই হারিয়ে ফেলেছে দেশের অন্যতম এই রাজনৈতিক সংগঠনটি। আর এসবের মূলে রয়েছেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী। তার শূণ্যতার কারণেই সিলেটের রাজপথে দলটির অবস্থান নেমে গেছে নিচের সারিতে। ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের সাহসী সৈনিক ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র ৪ বছর ১ মাস ১১ দিন  পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার। এই সাড়ে ৪ বছর ইলিয়াসের সাথে ‘নিখোঁজ’ ছিল সিলেট বিএনপির প্রাণশক্তিও। ইলিয়াসের শূণ্যতায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। উল্টো দিন দিন দলে বেড়েছে মতপার্থক্য, রেষারেষি।
Elis 01ইলিয়াসহীন জেলা ও মহানগর শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা করেও নেতাকর্মীদের রাজপথে সক্রিয় করতে পারেনি কেন্দ্রিয় কমিটি। সিলেটে যেন কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বের শূণ্যতা পূরণ।
২০০৯ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন এম. ইলিয়াস আলী। দায়িত্ব পান সিলেট বিভাগে দল পুনর্গঠনের। তার নেতৃত্বে সিলেটে ঐক্যবদ্ধভাবে শুরু হয় সরকার বিরোধী আন্দোলন। টিপাইমুখবাঁধ বিরোধী আন্দোলন নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়ান পুরো সিলেট বিভাগ। পাশাপাশি সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও তিনি সিলেটে গড়ে তোলেন আন্দোলন। করেন লংমার্চও।
সিলেটে ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বে যখন সরকার বিরোধী আন্দোলন তুঙে তখন ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে গাড়ি চালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন তিনি। এরপর ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে সিলেটে কয়েকদিন চলে আন্দোলন। তবে ধীরে ধীরে এই আন্দোলনে পড়তে থাকে ভাটা।
Nurul=03এক সময় দলীয় কোন্দলে জর্জরিত হয়ে রাজপথে নামার শক্তিও হারিয়ে ফেলে বিএনপি। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর সিলেট বিএনপিকে গোছানোর দায়িত্ব পান একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। কিন্তু কেউই ইলিয়াসের শূণ্যতা পূরণ করতে পারেননি। উল্টো সৃষ্টি হয় নতুন নতুন বলয়।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রামেও সিলেট বিএনপিকে মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেখা যায়নি। পাশাপাশি সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটির শীর্ষ নেতারা বেশিরভাগই ছিলেন আত্মগোপনে।
আন্দোলনের শুরুতে তৃণমূল নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থাকলেও নেতাদের পিছুটানের কারণে একপর্যায়ে তারাও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ইলিয়াসের মতো ইস্পাত কঠিন নেতৃত্বের অভাববোধ করেন।
এ ব্যাপারে সিলেট  মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বলেন- চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা ইলিয়াস আলীর অভাব অনুভব করছেন। তার বিচক্ষণ নেতৃত্ব সবসময় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখত। তার এ শূণ্যতা সিলেটের অন্য কোন নেতা পূরণ করতে পারেননি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়িচালক আনসার আলীসহ ‘গুম হওয়া’ সকল নেতাকর্মীদের ফিরে পেথে সিলেট বিএনপির ঐক্যবন্ধ আন্দোলনের ডাক দেব। আজ এম ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন সিলেটবাসী।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল