সিলেট ২৫শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২০
আমিনুল ইসলাম কানাইঘাটঃ
আজ ৪ ডিসেম্বর কানাইঘাট উপজেলায় মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সূর্য জেগে উঠার পুর্বেই পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর মুখামুখী লড়াই শুরু হয়। চারীদিকে গ্রেনেড আর গুলির বিকট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে এলাকার মানুষের। ঘুমন্ত মানুষেরা দৌড়ে পালাতে থাকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। সেদিন এই এলাকার বাতাসে বিশেষ করে ভেসে আসে নারী ও শিশুদের কান্নার আওয়াজ। অবশেষে এই মুখামুখী যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসর্ম্পণ করতে বাধ্য হয় পাক-হানাদার বাহিনী। ২৫ শে মার্চ রাতে পাক-হানাদার বাহিনী বাঙ্গালীদের উপর হামলা চালালেও মুলত কানাইঘাট উপজেলায় হামলা করে জুনের মাঝামাঝি সময়ে। দীর্ঘ সময়ে যুদ্ধ করে শত লাশের বিনিময় অবশেষে ৪ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় কানাইঘাট উপজেলা। সাবেক উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজমুল হক জানান সর্বশেষ তুমুল যুদ্ধ হয় উপজেলার নগলার ব্রিজ হতে ডাকবাংলা, চাপনগর ও ভাড়ারীমাটি জুড়ে। এ সময় পাক বাহিনীর নেতৃত্ব দেন ক্যাপন্টিন বসারত আর মুক্তি বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন ৪নং সেক্টর কমান্ডার সিআর দত্ত বীর বিক্রম। জানা যায় মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এ এলাকার মানুষ সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপিকে দ্বিতীয় ভারত বলে ডাকতো। যার কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্গ ছিল পাহাড়ী অঞ্চলের লোভাছড়া চা-বাগানে। ৪নং সেক্টরের ক্যাপন্টিন মাহবুবুর রব সাদির নেতৃত্বে তখন এ বাগানের কারখানাটি ধ্বংশ করে দেওয়া হয়েছিল। কারন দেশ ভাগের পুর্বে এ বাগানটি শোষন করতো পাকিস্তানীরা। এ উপজেলা থেকে মোট কত জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া জায়নি। তবে ধারনা করা হ”েছ ৩ শত থেকে সাড়ে ৩ শত জন হতে পারে। কারন স্বাধীনতার পর থেকে অনেকবার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাটি রদবদল হয়েছে। পাকিস্তানী বেলুচি রেজিমেন্টের সদস্যদের হাতে এ উপজেলায় প্রথম শহীদ হয়েছেন ভাড়ারীমাটি গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন। মুখামখী যুদ্ধে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা সেদিন শহীদ হয়েছিলেন তারা হলেন বাখালছড়ার আহসান আলী তার কবরটি আটগ্রাম বাজারে, চারখাই দসাখালিতে দর্পনগরের রফিকুল হক, ভারতের কমলপুরে বড়চাতলের আব্দুল খালিক, নিজ বাড়ি উজান বারাপৈতে নক্তিপাড়ার মশাহিদ আলী, নিজ বাড়িতে খুলুরমাটির নুর উদ্দিন, নিজ গ্রামে নক্তিপাড়ার আব্দুর রহমান, জুলাই বীরাখাইয়ে শহীদ আব্দুল লতিফ, সাতবাঁক ঈদগাহে দিনাজপুর জেলার কুতুয়ালী সদর থানার কালিতলা গ্রামের মরহুম তছির উদ্দিনের পুত্র ক্যাপ্টিন মাহবুবুর রহমান, বড়খেওরে কুমিল্লার ভ্রাক্ষণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া গ্রামের ক্যাপ্টিন খাঁজা নিজাম উদ্দিন সহ অজ্ঞত দুই জন এবং ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল হাকিমের কবর কুওরেরমাটি গ্রামে রয়েছে। এছাড়াও খুকুবাড়ির আহমদ হোসেন, দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদের আবু সিদ্দেক, ছোট দেশের সাঈদুল হোসেন, পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে মুখামুখী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। এ উপজেলায় ৩টি গণ কবর রয়েছে। দিনটি উপলক্ষে আজ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সকাল ১১ টায় র্যালী ও পরবর্তী অ¯’ায়ী কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
প্রধান সম্পাদক : আব্দুল লতিফ নুতন
যুগ্ম সম্পাদক : মোছাম্মদ নুরুন নাহার
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd