৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২১
কাঁচা পাটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে পাটশিল্পে অশনি সংকেতের আভাস। বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) পর এবার বেসরকারি পাটকলগুলো বন্ধের হুমকিতে। কিন্তু আইনের দোহাই দিয়ে কাঁচা পাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেই কোনও উদ্যোগ। যে যার মতো দাম বরাদ্দ করে। একই সময়ে দেশের একপ্রান্তের চাষি হাসে তো আরেক প্রান্তের চাষি কপাল ঠোকে।
পাট ফড়িয়াদের হাতে
ভরা মৌসুমে বাজার থেকে পাট কিনতে পারছে না পাটকলগুলো। এছাড়া মিলে পাট সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে পাট কিনতে পারছেন না। পাটের বাজার দখল হয়ে আছে ফড়িয়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে । তারা কৃষকদের কাছ থেকে পাট কিনে মজুত করছে। এতে প্রতিনিয়ত কাঁচা পাটের দাম বেড়ে যাচ্ছে । যদিও মন্ত্রণালয়ের আদেশ আছে, এক মাসে এক হাজার মণের বেশি পাট মজুত রাখা যাবে না।
গত ২০ জানুয়ারি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটপণ্যের রফতানির গতি বজায় রাখতে কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়তদারেরা এক হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুত করতে পারবেন না। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদফতরকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের অভিযোগ, পাটের দাম অস্বাভাবিক বাড়লেও সেটার লাভ চাষিরা পান না। মধ্যস্বত্বভোগীরা অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, যা বিদেশের বাজার হারানোর প্রধান কারণ। যদিও পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এনায়েত উল্লাহ খান ইউছুফ বলেন, নিয়মিত মনিটরিং হচ্ছে। এ ধরনের কিছু জানা থাকলে আমাদের অবহিত করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ হচ্ছে না
কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিল অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ)। একইসঙ্গে পাটশিল্প বাঁচাতে প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা পাট রফতানির ওপর ২৫০ মার্কিন ডলার রফতানি শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে সংগঠন দুটি। কিন্তু সেটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
কেন বিবেচনায় নেওয়া হলো না প্রশ্নে এনায়েত উল্লাহ খান ইউছুফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কাঁচা পাট রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও আছে। বর্তমানে ৭ হাজার বেল রফতানি হচ্ছে। রফতানির সিদ্ধান্ত যথাযথ মনে করায় সরকার তা বন্ধ করেনি। যদি ক্রাইসিস হয়, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ে, তখন অন্যভাবে ভাবতে পারি।
কাঁচা পাটের মূল্য নির্ধারণ করা যাবে না?
ব্যবসায়ীদের দাবি, যেহেতু পাটশিল্পে ব্যবহৃত একমাত্র ও প্রধান কাঁচামাল হিসেবে কাঁচা পাট ব্যবহৃত হয়, তাই পাটকলগুলো যাতে প্রয়োজনীয় পাট একটি নির্ধারিত মূল্যে পেতে পারে সে জন্য প্রতিবছর কাঁচা পাটের মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে। নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি তদারকি করতে হবে। পাটের মূল্য নির্ধারণের সময় কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সেটি বিবেচনায় রাখতে হবে।
এ বিষয়ে পাট অধিদফতরের যুগ্ম সচিব আরশাদ ইসলাম বলেন, খোলাবাজারের পণ্যমূল্য এভাবে নির্ধারণ করা যায় না। আবার পাট আইনেও এর সুযোগ নেই।
যদিও আইনে মূল্য নির্ধারণ অংশে বলা আছে, ‘সরকার, আদেশ দ্বারা বিভিন্ন শ্রেণির পাট বা পাটজাত পণ্যের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করিতে পারিবে, এবং সকল এলাকা বা ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট কোনও এলাকা বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে উক্তরূপে মূল্য নির্ধারণ করা যাবে। এবং এই আদেশ দ্বারা নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্যের কম বা সর্বোচ্চ মূল্যের অধিক মূল্যে কোন ব্যক্তি পাট বা পাটজাত পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করিতে পারবে না।’
অবশ্যই মূল্য নির্ধারণ সম্ভব জানিয়ে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফারিয়ান ইউসুফ বলেন, সরকার এটা আমলে নিচ্ছে না বলেই যার যে রকম খুশি মূল্য নির্ধারণ করছে। এটার চেয়েও বড় ক্ষতি হচ্ছে ম্যান্ডেটরি জুট প্যাকেজিং অ্যাক্ট বাস্তবায়ন না করার কারণে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গত বছর ১৮শ’ টাকার পাট সাত হাজারে বিক্রি হওয়ায় বিদেশের বাজার হারাতে হয়েছে। কেননা, তারা বিকল্প খুঁজে নিতে চেষ্টা করেছেন। উচ্চ দামের কারণে আমরা বাজার হারিয়েছি। এই বিষয়গুলো সমাধান হওয়া জরুরি। ভুক্তভোগী হচ্ছি আমরা, লাভবান হচ্ছে কিছু স্বার্থভোগী মানুষ।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D