কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দিতেই বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন: বিএনপি

প্রকাশিত: ৭:৩৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৭

কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দিতেই বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দিতেই বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬ (খসড়া) করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করেন, এই আইনে অনেক অস্পষ্ঠতা রয়েছে। আইনের খসরা প্রণয়নে যারা যুক্ত, তারা অমনোযোগী ও অপরিকল্পিতভাবে কাজটি করেছেন।

শুক্রবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির সিনিয়র নেতারা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এসব কথা বলেন। এদিন বিকালে রাজধানীর হোটেল লেকশোরে প্রায় দুইঘন্টার বেশি আলোচনা সভায় বক্তারা নাগরিকত্ব আইনের সমালোচনা করে এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।00

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নাগরিকত্ব আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের কিছু ব্যক্তি ও একটি পরিবারকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাকে আরও সংহত এবং তাদেরকে প্রটেকশন দেওয়াই হচ্ছে এই আইনের উদ্দেশ্য।

সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে একের পর এক আইন করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা দুঃসময় অতিক্রম করছি। সে দুঃসময় হচ্ছে মৌলিক অধিকারগুলোকে হরণ করে নীলনকশা বাস্তবায়ন করা। এর মূল লক্ষ্য সমাজকে বিভক্ত করে তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা।

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, একটি আইন করার আগে এ নিয়ে নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিৎ। সভা-সেমিনার করা উচিৎ। সরকারের সামনে এখনও সুযোগ আছে এ নিয়ে আলোচনা করার।

মওদুদ মনে করেন, নাগরিকত্ব খসড়া আইনটিতে কিছু কিছু সেকশন আছে, যা সংবিধানবিরোধী। এতে করে আইনটি অ্যাবিউজ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মত দেন এই বিজ্ঞ আইনবিদ।0

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, একটি আইন দিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করা যায় না। মানুষ জন্মগতভাবেই কোনও না কোনও দেশের নাগরিক হবে, এই আইনে সেটি লঙ্ঘন হয়েছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের অনেকেই বাইরের কিছু দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা এই নেতাদের নামের তালিকা দেশবাসীর সামনে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।

বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।

নাগরিকসভায় সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, সরকারি দলের যারা বিদেশি নাগরিক আছেন, তারা তাদের নাম প্রকাশ করুন। তিনি দাবি করেন, এখনই নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করার দরকার নেই।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, তরিঘড়ি করে নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে অনেকক্ষেত্রেই। প্রাইভেটাইজেশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান মনে করেন, নির্বাচিত সংসদেই এই নাগরিকত্ব আইন পাশ করা উচিৎ।

অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, নাগরিকত্ব আইন বিদ্বেষমূলক ও উদ্দেশ্যমূলক। এই আইন হলেও সুপ্রীম কোটে টিকবে না। এটি পদে-পদে সাংঘর্ষিক হবে।

এই নাগরিক ভাবনার আলোচনায় বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, গিয়াস কাদের চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, গোলাম আকবর খন্দকার, আবদুল হালিম, কাজী মাজহারুল আনোয়ার, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সুজাউদ্দিন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্ম, শামা ওবায়েদ, অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়া, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, হেলাল খান, শিরিন সুলতানা, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, শায়রুল কবির খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল