সিলেট ৯ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
সিলেটের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে এমসি কলেজ ছাত্র শামীম আহমদ ছোটন হত্যা মামলা ১৯ জনকে আসামি করে চার্জশিট প্রদান করেছে পুলিশ। গতকাল সিলেটের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোম্পানীগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ এই চার্জশিট প্রদান করেন। গতকাল দুপুরে চার্জশিট প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন সিলেট জেলা পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. শফিকুর রহমান মুকুল। চার্জশিটে অভিযুক্তরা হচ্ছে, কোম্পানীগঞ্জের কলাবাড়ি গ্রামের আলিম উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন, মনির মিয়া, জৈন উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, ছয়দুর রহমান, কালা মিয়া, কালীবাড়ি গ্রামের বিল্লাল মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, কলাবাড়ি গ্রামের আলী নূর, কালীবাড়ী গ্রামের রজন মিয়া, কলাবাড়ী গ্রামের শাহাবউদ্দিন, আব্দুল হামিদ, শুকুর আলী, উত্তর কলাবাড়ী গ্রামের মোহাম্মদ আলী, রিয়াজ উদ্দিন, উত্তর রাজনগর গ্রামের মাসুক মিয়া, ফারুক মিয়া ও কালী বাড়ীর জুলহাস মিয়া। চার্জশিটে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সকল আসামিকেই আলোচিত এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছেন। ঘটনা ৩০ শে অক্টোবর। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির ১০ নম্বর এলাকা সংলগ্ন নদীতে। ওই দিন আলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আসামিরা এসে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের উপর। এ সময় ওই এলাকায় অবস্থান করছিলেন কোম্পানীগঞ্জের পুরান ভোলাগঞ্জ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাজী সমর আলীর ছেলে ও এমসি কলেজের ছাত্র শামীম আহমদ ছোটন। এ সময় আসামিরা কোয়ারি অভ্যন্তরেই ছোটনকে নির্মমভাবে পিঠিয়ে খুন করে। শুধু খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি মুখের ভেতরে ছুলফি ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনা নির্মমতায় হতবাক হয়েছিলেন কোম্পানীগঞ্জবাসী। তারা খুনের ঘটনার আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে গোটা উপজেলাজুড়ে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন শেষে সিলেটেও ছড়িয়ে পড়ে। সিলেটের এমসি কলেজ সহ সবকটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আলোচিত এ খুনের ঘটনার শাস্তি দাবি করে রাস্তায় নেমে আসে। তবে, খুনের ঘটনার পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দেওয়ায় পুলিশ ওই সময় অভিযুক্তদের অনেককেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এখনও পলাতক আছে অনেকেই। এই অবস্থায় পুলিশ আলোচিত এ খুনের ঘটনার দীর্ঘ ৬ মাস পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। এদিকে, খুনের ঘটনার পরদিন নিহত শামীম আহমদ ছোটনের ভাই গিয়াস উদ্দিন বতুল্লা মিয়া বাদি হয়ে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় গিয়াস উদ্দিন বতুল্লা মিয়া কলাবাড়ী গ্রামের আলীম উদ্দিনকে প্রধান আসামি করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির নদী এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা হারে চাদা দাবি করে আসছিলো। কিন্তু কথা মতো টাকা না দেওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর আসামিরা ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালায়। ওই সময় কলেজ ছুটি থাকায় এমসি কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আহমদ ছোটন কলেজের ছুটির কারনে বাড়িতেই ছিল। সে ভাইয়ের ব্যবসার দেখতে কোয়ারি এলাকায় গিয়েছিল। কিন্তু তাকেই সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে খুন করে। চার্জশিটে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি আলিম উদ্দিন ও সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা বাদি সহ ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে। কিন্তু কথা মত চাদা না দেওয়ায় বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে বিচার সালিস হলেও ঘটনার নিস্পত্তি ঘটেনি। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার দিন আসামিরা ছুলটি, ঝাটা, দা, লাঠি নিয়ে কোয়ারি এলাকায় হামলা চালায়। এ সময় আসামিরা কলেজ ছাত্র শামীম আহমদ ছোটনকে একা পেয়ে তার মুখের ভেতরে ছুলফি দিয়ে ঘা দেয়। এই ঘা কলেজ ছাত্র শামীমের ঘাড় পর্যন্ত ছিদ্র হয়। এ সময় তাদের হামলায় আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী গুরুতর আহন হন। চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা ১৯ আসামির বিরুদ্ধে ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩০৭/৩৮৫/৩০২/৩৪/১১৪ ধারায় অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া চার্জশিটে কলাবাড়ী গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নানের ছেলে নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় অভিযুক্ত করা হয়নি। এছাড়া, চার্জশিটে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। সিলেটের কোর্ট ইন্সপেক্টর সৈয়দ শফিকুর রহমান মুকুল জানিয়েছেন, চার্জশিট গতকাল তাদের হাতে এসে পৌছেছে। চার্জশিট নিয়ে পর্যালোচনার পর আজ-কালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরন করা হবে। এদিকে, মামলার চার্জশিট থানা থেকে আদালতে আসার পথে কয়েকদিন বিলম্ব হয়। এই সময়ের মধ্যে মামলার অন্যতম আসামি কালী বাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র রজন মিয়া কোম্পানীগঞ্জের আরও একটি চাঞ্চল্যকর জৈন উদ্দিন হত্যা মামলার আসামি হয়ে আদালতে হাজিরা দিয়েছে। ওই মামলায় আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এর আগে এ মামলায় জিয়া উদ্দিন, ফারুক মিয়া ও জুলহাস মিয়া গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ১৯ জনের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ৪ জন।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd