১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০১৬
সিলেটে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাম ভাঙিয়ে একটি সংগঠন তাঁতবস্ত্র ও হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খোদ ওই সম্প্রদায়ের মানুষজন বলছেন, মেলার আয়োজক আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থা (আউস) একটি ভুঁইফোড় সংগঠন। যাঁরা মেলা চালাচ্ছেন, তাঁরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নন।
গত ২১ জুন নগরের দরগাগেট এলাকার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর খুদে শিক্ষার্থীদের সাহায্যার্থে ওই মেলার উদ্বোধন করা হয়। চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
সিলেটের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের অধিকার আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে এথনিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো)। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, ‘আউস নামের কোনো সংগঠনের কর্মকাণ্ড এর আগে আমাদের চোখে পড়েনি। অতীতেও সম্প্রদায়ের কোনো একজনকে আয়োজক কমিটিতে রেখে নগরে আদিবাসীদের নাম ভাঙিয়ে মেলা আয়োজনের নজির রয়েছে। এটিও সে রকম একটি মেলা বলে আমরা মনে করছি।’
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, মেলার আয়োজক সংস্থার সভাপতি হিসেবে উত্তম রতন সিংহ নামে মণিপুরি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির নাম রাখা হয়েছে। তিনি ছাড়াও পাঁচ-ছয়জন মেলা আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তবে তাঁদের কেউই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য নন। মেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন মো. বাবুল আহমদ নামের একজন। মূলত তিনিই পুরো মেলার নেপথ্যে রয়েছেন। মেলায় অংশগ্রহণকারী কয়েকজন ব্যবসায়ী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে উত্তম রতন সিংহ নিজেকে মেলা আয়োজক সংগঠন আউস-এর সভাপতি দাবি করে বলেন, সংগঠনটি দুই বছর আগে প্রতিষ্ঠিত। ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রত্যেকেই ‘আদিবাসী’ সম্প্রদায়ের। কেবল মেলাটি পরিচালনার জন্য কয়েকজন বাঙালিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাবুল আহমদ বলেন, ‘আয়োজকদের সময়-সুযোগ না থাকায় আমরা মূলত তাঁদের মেলাটি পরিচালনা করে দিচ্ছি। মেলা থেকে উপার্জিত অর্থ আদিবাসী শিশুদের শিক্ষার পেছনে ব্যয় করা হবে। এর বাইরে কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নেই।’
তবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃত্বস্থানীয় কয়েকজন বলেন, অতীতে সিলেট নগরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দুস্থ ও গরিবদের সহায়তার কথা বলে এমন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু যাদের জন্য আয়োজন তারা তার সুফল বিন্দুমাত্রও পায়নি। তা ছাড়া এসব মেলায় তাঁতবস্ত্র ও হস্তশিল্পের নামে বিদেশি কাপড়সহ নানা সামগ্রী বিক্রি হয়। এটি ক্রেতাদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণার শামিল।
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলাটি তাঁতবস্ত্র ও হস্তশিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হলেও সেখানে ভারতীয় কাপড়, জামা, পাঞ্জাবি, শাড়ি, গয়না, প্রসাধন সামগ্রী, খেলনা, জুতাসহ নানা ধরনের সামগ্রী দেদার বিক্রি হচ্ছে। মেলার ১৯টি স্টলের মধ্যে মাত্র ২টি তাঁত ও হস্তশিল্পের।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, ‘মূলত ঈদ সামনে রেখে মুনাফা লাভের জন্যই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা শেষে আদৌ আয়োজকেরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর খুদে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করবে কি না, এ নিয়ে আমরা সন্দিহান। তাই স্থানীয় প্রশাসনের উচিত, এ ধরনের মেলা আয়োজনকারীদের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখা।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D