গণবিরোধী পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জোরালো আহবান রুহুল কবির রিজভীর

প্রকাশিত: ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০১৬

গণবিরোধী পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জোরালো আহবান রুহুল কবির রিজভীর

64469_bnp-rijviগ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে  জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বিএনপি।শুক্রবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ ঘোষণা দেন।

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সরকারী হীন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আমি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে সরকারের এ ধরনের গণবিরোধী পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জোরালো আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে বিএনপি জনগনকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গনবিরোধী অবৈধ এ সরকার দূর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে সকল সেক্টর ধ্বংসের পর আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দ্বিগুনের মতো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমায় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমেছে তারপরও এ বৃদ্ধি করা হচ্ছে সরকারের দুর্নীতির ব্যপ্তি আরও বৃদ্ধি করার জন্য। গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ালে মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যয় আতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে জনগনকে অতুল গহবরে ঠেলে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, গুম অপহরন লাশের মিছিলে যেখানে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে সেখানে নতুন করে দাম বাড়ালে ক্রয় ক্ষমতা হারাবে। দেশ দুর্যোগে পড়বে। দেশের অর্থনীতির বিশাল অংশ বিদেশে পাচার করে অর্থনীতিকে দাফন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পুলিশ -র‌্যাব হত্যা বিলাশী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ র‌্যাব এখন বাংলাদেশে হত্যাবিলাসী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্র শক্তিকে নিজেদের সুবিধামত ব্যবহার করার জন্যই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরকার নিজেদের মনের মত করে সাজিয়ে নিয়েছে। কারণ এদেরকে দিয়ে সরকারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সহ্য়াতা নেয়া আর সরকারের সীমাহীন দুর্নিিত  আর লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠকে নিস্তব্ধ করার ভাড়াটিয়া বাহিনী হিসেবে কাজ কারনো।

গণমাধ্যমকে প্রচনন্ড হুমকির মধ্যে রয়েছে দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে তীলে তীলে নি:শেষ করার চেষ্টা করছে সরকার। রিমান্ড আবেদন বাতিল করে মাহমুদুর রহমানেন  নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাঁশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, জনগণ গুলি করে নাই। পুলিশ নিজেই দায় নিয়েছে। ক্ষমতাসীনরা যে জনগণের কথা বলছে তারা ছাত্রলীগ যুবলীগ।  আর তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন , ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দফতর আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি দেয়া পুরো বক্তব্য

সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা
আপনাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ভোটারবিহীন এ অবৈধ সরকারের অপশাসন, ভয়াবহ সন্ত্রাস আর দূর্নীতিকে চেপে ধরে রাখার জন্য তারা শুধু মানুষের কন্ঠরোধই করছেনা, তারা গণমাধ্যমকে সম্পূর্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এজন্য গণমাধ্যম বন্ধসহ সম্পাদক ও সাংবাদিকদের গ্রেফতার নির্যাতন ও দলন নিপীড়ণের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। সকল গণমাধ্যমকে রাখা হয়েছে প্রবল হুমকির মধ্যে । অবৈধ সরকার বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে যে নিয়ন্ত্রণ করছে সে বিষয়ে জাতিসংঘসহ আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। বিশিষ্ট সাংবাদিক, সময়ের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাহসী সম্পাদক, অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের আতঙ্ক, স্বাধীন বিবেকের প্রতিনিধি মাহমুদুর রহমানকে তিন বছর ধরে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি বার বার উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও মিথ্যা ও রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে তাকে কারা প্রকোষ্টে আটকে রাখা হচ্ছে। বর্তমানে তাঁকে তিলে তিলে নি:শেষ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে কারাগারে থাকলেও গত বুধবার কোতোয়ালী থানার ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ তারিখের নাশকতার একটি বানোয়াট ও মিথ্যা মামলায় তাঁকে আবারো গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত আগামী ১২ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় নতুন করে মাহমুদুর রহমানকে আটক দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া সম্পূর্ণ অমানবিক ও সরকারের নিষ্ঠুর প্রতিহিংসা চরিতার্থেরই বহি:প্রকাশ। ভোটচারবিহীন প্রধানমন্ত্রী একতরফা প্রভুত্ব করার উদ্দেশ্যই প্রতিবাদি কণ্ঠস্বর মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে আটকে রেখেছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড আবেদন বাতিল করে তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
গনবিরোধী অবৈধ এ সরকার দূর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে সকল সেক্টর ধ্বংসের পর আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দ্বিগুনের মতো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমায় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমেছে তারপরও এ বৃদ্ধি করা হচ্ছে সরকারের দুর্নীতির ব্যপ্তি আরও বৃদ্ধি করার জন্য। এক দিকে মানুষ সরকারের ভযাবহ গণতন্ত্র হরণের দুঃশাসনের পিষ্ট ও নির্বাক এর ওপর গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ালে মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যয় আতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে জনগনকে অতুল গহবরে ঠেলে দেয়া হবে। এমনিতে গুম অপহরণ আর লাশের মিছিলের ভয়াবহ বাস্তবতায় সমাজে ভয়াবহ এনার্কি বিরাজ করছেঅন্যদিকে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষ ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে এবং মানুষ ভয়াবহ দুর্যোগে পড়বে, মানুষের দৈনন্দিন জীব যাপন আরও কষ্টকর হয়ে পড়বে, কৃষি ও শিল্প উৎপাদনেও ব্যাপক প্রভাব পড়বে। একদিকে রাজকোষ জনগনের শত শত কোটি টাকা চুরি, গত কয়েক বছর ধরে সরকারী ব্যাংকগুলো লুপাট, শেয়ার বাজার থেকে লক্ষকোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশের সম্পদের বিরাট অংশ বিদেশে পাচার করে ক্ষমতাসীনরা দেশের অর্থনীতিকে কাফন পড়িয়ে দিয়েছে। দারিদ্র অনটনের পিষ্টন যন্ত্রে জনগনের অষ্টকপ্রাহরিক জীবনটা পেষাই করে আখের মতো ছিব্রে করে তুলছে এ ভোটারবিহীন সরকার। এদের অপশাসন আর অপকীর্তির কারণে রাষ্ট্রীয় জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে মানব আত্মার অবমাননার বিভিন্ন দিক।

ভোটারবিহীন প্রধানমন্ত্রী বরাবরই বিরোধী দলের প্রতি সকাল সন্ধ্যা ক্রুদ্ধ হুঙ্কার  আর র্ভৎসনামূলক বক্তব্য দিতে ভাল বাসেন- অত্যাচার ও উৎ’পীড়নের সকল পন্থা অবলম্বনের পরও। তার এ নিষ্ঠুর আচরণে একমাত্র  উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরাজমান জনঅন্তোষের পক্ষে কেউ যাতে কথা না বলতে পারে।  দেশে মনে হয় সব সময়ের জন্য একটি সান্ধ্য আইন জারি করে রাখা হয়েছে। মানুষের কণ্ঠস্বরকে নির্বাক করার জন্যই এ বেআইনি নিষ্ঠুর দমন মুলক সান্ধ্য আইন জারি রাখা হয়েছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে পুলিশের কাছে বিলীন করে দেয়া হয়েছে। এ রাষ্ট্র এখন পুলিশের র্কতৃত্বে। সুতরাং অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে জনগনকে চরম দূর্বিপাকে ফেলার পরও  কেউ যাতে প্রতিবাদী না হতে পারে তার জন্যই পুলিশকে দেয়া হয়েছে অপরিসীম ক্ষমতা। পুলিশ র‌্যাব এখন বাংলাদেশে হত্যাবিলাসী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্র শক্তিকে নিজেদের সুবিধামত ব্যবহার করার জন্যই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরকার নিজেদের মনের মত করে সাজিয়ে নিয়েছে। কারণ এদেরকে দিয়ে সরকারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সহ্য়াতা নেয়া আর সরকারের সীমাহীন দুর্নিিত  আর লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠকে নিস্তব্ধ করার ভাড়াটিয়া বাহিনী হিসেবে কাজ কারনো।

বন্ধুরা
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সরকারী হীন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি । আমি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে সরকারের এ ধরনের গণবিরোধী পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জোরালো আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি জনগনকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল