১লা জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০১৬
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার কয়েক ঘণ্টার মাথায় ওই এলাকা থেকে রক্তাক্ত যে তরুণকে পুলিশ আটক করেছিল, সেই জাকির হোসেন শাওন পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার পরিবার দাবি করেছে, পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে এই তরুণের মৃত্যু ঘটেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি আজ এই খবর জানিয়েছে।
শাওন প্রায় একবছর ধরে হলি আর্টিজান বেকারিতে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
একদল অস্ত্রধারী তরুণ গত ১ জুলাই ওই ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করে। পরদিন কমান্ডো অভিযানে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র বাহিনী। সে সময় ছয় সন্দেহভাজন অস্ত্রধারী নিহত হয়।
শুক্রবার রাতে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রক্তাক্ত অবস্থায় এই তরুণকে আটক করে পুলিশ।
ওই অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলের কাছ থেকে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় শাওনকে আটক করে। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে পুলিশ পাহারায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
পুলিশ ও তার পরিবার জানায়, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণকে শুক্রবার দুপুরে ক্যাজুয়ালটি থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ওই দিন বিকেলে সেখানেই মৃত্যু হয় শাওনের।
শাওনের বাবা আব্দুস সাত্তার তার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত দাবি করে জানান, ‘তার নিরপরাধ ও প্রধান উপার্জনক্ষম সন্তানটিকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে পুলিশ’।
তিনি বলেন, ‘তার পুরো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের অনেক জায়গায় রক্ত জমাট অবস্থায় ছিল। তার এক চোখে ও দুই হাঁটুতে কালচে দাগ পড়েছে। তার কব্জিগুলোতেও কালচে দাগ ছিল। দেখে মনে হয় তার দুই হাতে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছে।’
জাকির হোসেন শাওন
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রধান নুর খান লিটন বলেন, হামলায় শাওন জড়িত ছিল কি না তা পরিস্কার নয়।
তিনি বলেন, ‘আইএস পাঁচ হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেছে এবং তাদের সকলকেই পুলিশ চিহ্নিত করেছে। আর হামলাকারীদের মধ্যে তার নাম ছিল না। যদি তাকে হামলার সাহায্যকারী বলে মনে করা হয় তাহলে অবশ্যই পুলিশকে প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।’
শাওনের মা
তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নির্যাতন করে শাওনকে হত্যার কথা অস্বীকার করেছেন। ডিএমপির মুখপাত্র মাসুদুর রহমান জানান, ‘আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় শাওনকে আটক করা হয়। সে আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কোনো সুযোগ আমাদের ছিল না’।
শাওনের বাবা এএফপিকে বলেন, ১ জুলাইয়ের ওই ভয়াবহ হামলার ঘণ্টাখানেক আগেও শাওন তাকে ফোন করে জানিয়েছে সে ঈদের বোনাস পেয়েছে। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের উদ্দেশ্যে সে শীঘ্রই বাড়িতে আসবে।
গুলশান হামলার পরের দিন শাওনকে দেখতে তার বাবা-মা হাসপাতালে গেলে সে তাদের চিনতে পারেনি। তার বাবা বলেন, ‘সে আমাদের চিনতে পারছিলো না। সে আমাকে তার ভাই মনে করেছিল’।
তিনি আরো বলেন, ‘ সে ঘুমন্ত অবস্থায় কাঁদছিলো আর কাউকে কাকুতি-মিনতি করে বলছিলো, ‘আমারে আর মাইরেন না। আমারে ছাইড়া দেন’।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D