ঘটনার কিনারা হয়নি ১ বছরেও

প্রকাশিত: ৮:২০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০১৬

ঘটনার কিনারা হয়নি ১ বছরেও

9867_f2গত বছরের বৈশাখী উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে যৌন হয়রানি ঘটনার কোনো কিনারা হয়নি। ৩৬৫ দিন পেরিয়ে আবারও পহেলা বৈশাখ উদযাপন হচ্ছে আজ। বহুল আলোচিত এ ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ৮ জনের মুখচ্ছবি শনাক্ত করেছিল পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল পুরস্কারও। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আদালতের নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর বর্ষবরণের দিন বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে দুর্বৃত্তদের হাতে বেশ কয়েকজন নারী লাঞ্ছনার শিকার হন। বখাটেদের ঠেকাতে গিয়ে সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের নেতা লিটন নন্দীসহ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানা পুলিশ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করে। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গত বছরের মে মাসে আটজনের ছবি প্রকাশ করে প্রত্যেককে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। তবে বখাটেদের শনাক্ত করতে না পেরে গত বছরের ২২শে ডিসেম্বর আদালতে ঘটনা সত্য উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চলতি বছরের ২৭শে জানুয়ারি পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ান লেনের বাসার সামনে থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে কামাল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ডিবি। কামালকে গ্রেপ্তারের পর মামলাটি আবারও পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হয় ডিবির পক্ষ থেকে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কামাল শনাক্তকৃত ৮ জনের একজন। সে নিজের ছবি দেখে নিজেই নিজেকে শনাক্ত করেছে। তবে কামালের দাবি, বর্ষবরণের দিন টিএসসি এলাকাতে গেলেও কাউকে যৌন হয়রানি করেনি। কয়েক দফা রিমান্ডে  জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৩শে ফেব্রুয়ারি মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্তভার ডিবির পরিবর্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে দেয়া হয়। পিবিআই কামালকে দুই দফায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদেও কামাল টিএসসিতে গেলেও যৌন হয়রানির কথা অস্বীকার করে। গত ২৩শে মার্চ আদালতে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন ধার্য ছিল। এদিন প্রতিবেদন না দেয়ায় আদালত আগামী ১৭ই এপ্রিল নতুন দিন ধার্য করেছে। এদিকে পিবিআই সূত্র জানিয়েছে, মামলার তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর তারা শনাক্তকৃত অপর যুবকদের গ্রেপ্তারে সোর্স নিয়োগ করে। বাকি ৭ জনের মধ্যে তারা আরও দুজনের নাম-ঠিকানা পেয়েছে। এ দুজন ছাত্র বলে পিবিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, কামালকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সে টিএসসিতে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেনি। এ ছাড়া এ ঘটনায় অপর বখাটেদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল