ছাত্রলীগের ২ গ্র“পের উত্তেজনায় শাবি বন্ধ : তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬

ছাত্রলীগের ২ গ্র“পের উত্তেজনায়  শাবি বন্ধ : তদন্ত কমিটি গঠন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনায় আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় এক জরুরী সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ করার প্রতিবাদে ভিসি ড. আমিনুল হক ভুইয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিশ^বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সদস্য ড. কবির হোসেন জানান, সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। একই সময় পর্যন্ত ছাত্রদের হল বন্ধ থাকলেও ছাত্রীদের হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ক্যাম্পাস সূত্র জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিশ^বিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান সমর্থিত গ্র“পকে সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ, অঞ্জন রায়, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ সমর্থিত সম্মিলিত গ্র“প ধাওয়া দিয়ে হল দখলে নেয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে রাতভর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ক্যাম্পাসে দফায় দফায় গুলিবর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর রাতভর উত্তেজনা বিরাজ করলে শাহপরান হলে ভোর ৬টা এবং দ্বিতীয় ছাত্র হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে সকাল সাতটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলে কর্তৃপক্ষ। এর আগে রাত বারোটার দিকে তিনটি ছাত্র হলে একযোগে তল্লাশি করে পুলিশ। রাতভর তল্লাশির পর এ ধরনের সিদ্ধান্তকে না মেনে সকাল থেকেই শাহপরান হলের সামনে স্লোগান দিতে থাকে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে সিন্ডিকেট ছাড়াই প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষরে এ ধরনের হল খালি করার সিদ্ধান্তকে নিয়ম বিধিবহির্ভূত বলছেন সাবেক শিক্ষকরা। এছাড়া এ সিদ্ধান্তে ভোগান্তিতে পড়া শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়টিকে প্রশাসনের নিতান্তই স্বেচ্ছাচারিতা বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য।
অবরুদ্ধ ভিসি: বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টায় তারা ভিসি ভবনের সামনের ও পিছনের দরজায় তালা দিয়ে বিদ্যুত লাইন বিছিন্ন করে ভিসি ড. আমিনুল হক ভুইয়া অবরুদ্ধ করে রাখে। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশ প্রত্যাহার এবং সকল ক্লাস-পরীক্ষা যথাসময়ে নেয়ার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বুধবার বেলা ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিজ ভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন ভিসি।
এর আগে দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাস বন্ধের প্রতিবাদে ও খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের ফলে মহসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে যাত্রীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে অবরোধ প্রত্যাহার করে তারা।

বিশ^বিদ্যালয়ের শাহপরান হলের প্রভোস্ট শাহেদুল হোসেন জানান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান নিয়ন্ত্রিত ৪২৯ নং কক্ষে থেকে জিআই পাইপ ৪টি, ককটেল ২টি ও কয়েকটি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।

এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, হল আমার নিয়ন্ত্রনে নেই। পরিকল্পিতভাবে ৪২৯ নং কক্ষ দখল করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ঢুকিয়ে পুলিশকে দিয়ে উদ্ধারের নাটক করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি: ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের উত্তেজনার ঘটনায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. জহির বিন আলমকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, শাহপরান হলের প্রাধাক্ষ্য শাহেদুল হোসাইন, বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধাক্ষ্য ড. হাসান জাকিরুল ইসলাম ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রাধাক্ষ্য ড. শরদিন্দ ভট্টাচার্য এবং সহকারী প্রক্টর আলমগীর কবির।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল