ছয় দফা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর।

প্রকাশিত: ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ৭, ২০১৬

ছয় দফা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর।

ছয় দফা: শহীদের রক্তে লেখা 10491100_10154390509235201_320201613430448614_n
তোফায়েল আহমেদ

ঐতিহাসিক সাতই জুন। ১৯৬৬-এর এই দিনে বাংলার গণমানুষ স্বাধিকার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী হরতাল পালন করেছিল। স্বৈরশাসক আইয়ুব খান এদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে সংখ্যাগুরু বাঙালী জাতিকে গোলামীর শৃঙ্খলে চিরস্থায়ীভাবে শৃঙ্খলিত করার জন্য যে ষড়যন্ত্র করেছিল, তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু মুজিব, ’৬৬-এর ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে সম্মিলিত বিরোধী দলসমূহের এক কনভেনশনে বাংলার গণমানুষের স্বাধিকারের দাবী সম্বলিত বাঙালীর “ম্যাগনাকার্টা” খ্যাত ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবী উত্থাপন করে তা বিষয়সূচীতে অন্ত
র্ভূক্ত করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু সভার সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ আলী ছয় দফা দাবী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে এবিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ও ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে ছয় দফা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেন। অতঃপর ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ছয় দফা দলীয় কর্মসূচী হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ছয় দফা প্রচার ও প্রকাশের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট উপ-কমিটি গঠন করা হয় এবং তাঁরই নামে পুস্তিকাটি মুদ্রিত হয়। একই বছরের মার্চের ১৮, ১৯ ও ২০ তারিখ ছিল আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন। এদিন কাউন্সিল সভায় পুস্তিকাটি বিলি করা হয়। ছয় দফা কর্মসূচী দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিশেষ করে আমাদের মতো অপে
ক্ষাকৃত তরুণ ছাত্রলীগ নেতৃত্বের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ছয় দফা এতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে, বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এই পুস্তিকা সযত্নে রক্ষিত হয়েছিল। ছয় দফা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলতেন, “সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য।” বস্তুত, ছয় দফা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর।