সিলেট ৫ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার: বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী দেশে জঙ্গীবাদী উত্থানকে জাতীয় সংকট বলে উল্লেখ করেছেন এবং সংকট উত্তরণে জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে একটি কৌশল উদ্ভাবনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ঊক্তব্যে এ আহ্বান জানান। বি. চৌধুরী বলেন, দেশে এই জঙ্গীবাদী উত্থানকে সরকার ”নব্য জেএমবি” বলে উল্লেখ করেছেন। তার ফলে দেশে অশান্তি ও উদ্বিগ্নতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক মানুষের প্রাণ চলে গেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গীদের মধ্যে দুটি শ্রেণীর একটি স্বদেশে এবং অথবা বিদেশে প্রশিক্ষিত ও প্রণোদিত হয়েছে এবং দেশে একটি উগ্র নেতৃত্ব সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরা সন্ত্রাস ও রক্তপাত করেছে। ভবিষ্যতে আরও রক্তপাত হওয়ার হুমকিও রয়েছে। দেশের মানুষ এবং আমাদের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সহযোগীগণ ভীতি এবং শংকার মধ্যে দিন যাপন করছেন।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, জঙ্গীদের উগ্র নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে শিক্ষিত এবং সমাজের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত তরুণদের একটি অংশকে বিভ্রান্ত এবং ’ব্রেইন ওয়াস’ করা হয়েছে। ফলে তরুণদের একটি অংশ মন্ত্রমুগ্ধের মতো উগ্রবাদী নেতৃত্বের আদেশ মেনে চলছে।
সমাজকে ভ্রষ্ট উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, সামজিক অনাচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং ক্রমবর্ধমান মাদকে তরুণদের সংখ্যা বৃদ্ধি এটা একটি সামাজিক বাস্তবতা। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অনেকেই বিষন্নতা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে বিষন্নতা থাকা রোগীদের একটি বড় অংশ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকে। ’বিষন্ন’ তরুণরা অতি সহজেই ভয়ংকর কাজ করতে পারে, এটাও বৈজ্ঞানিক সত্য।
তিনি বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে সামগ্রিকভাবে সমস্যার সবদিক বিবেচনা করতে হবে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণপক্ষ হচ্ছে দেশের সরকার। সরকার কয়েকটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন, তারা তার কৃতিত্বের দাবিদার। কিন্তু জঙ্গীদের বড় নেতাদের জীবন্ত না পাওয়া পর্যন্ত তাদের মূল পরিকল্পনা উদঘাটন করা কঠিন হবে বলে মনে করি।
ঐশীর নামোল্লেখ না করে বি. চৌধুরী বলেন, যেখানে একজন সীমিত আয়ের কর্মচারীর কন্যা মাসে ৫০ হাজার টাকা পকেট খরচ পায়, যার অধিকাংশ মাদক সেবনে এবং বেপরোয়া জীবনযাত্রায় সে খরচ করে থাকে এবং তারপর তার পিতা-মাতাকে হত্যা করে-এটা সুস্থ সমাজের লক্ষণ নয়। একইভাবে হত্যা, গুম, রাহাজানি, যৌন হয়রানি এবং ছাত্রী ও মহিলা হত্যা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তার ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী। কারণ বের করতে হলে মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং দায়িত্বশীল সরাকরি কর্মচারী, যুব প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, ( সরকারি-বেসরকারি) এবং মা-বোনদের সাথে আলোচানার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাস্তা বের করতে হবে। যেহেতু সরকারের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত সেইহেতু সরকারকেই প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে।
অন্যদিকে সরকার ও বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দকে আস্থায় এনে তাদের মধ্যে কেনো গ্যাপ বা শূন্যতা থাকলে চিহ্নিত করতে হবে এবং সবার পরামর্শ নিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ব্যাপারে সজাগ করতে হবে।
বি. চৌধুরী বলেন, জঙ্গী ইস্যুতে সরকার দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিরোধীদলকে ঐক্যপ্রক্রিয়ায় শরীক করতে রাজী হন নাই। সরকারকে অবশ্যই বুঝতে হবে বাংলাদেশের মোট ভোটশক্তির একটি বড় অংশের মানুষ এখনও বিরোধীদলের পাশে রয়েছে। সরকার বিরোধীদলের কার্যকর শক্তিকে রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে এই সংকটের সময় অনেক কাজে লাগাতে পারতেন। সুতরাং বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে ঐক্যপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নয়, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বি.চৌধুরী এই সংকটের সময় বিরোধী দলের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, যদিও বিরোধী দলের দায়িত্ব সরকারের শক্তি-সামর্থ এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার তূলনায় সীমিত। কিন্তু তাদের পিছনে রয়েছে বড় একটি ভোটশক্তি। জনগণকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলা তাদের কর্তব্য। এই সংকটের সময় বিরোধীদলগুলোর জনগণের কাছে যেভাবে যাওয়ার কথা ছিল, যেভাবে কথা বলার কথা ছিল, তারা এখনও করতে পারেনি।
বি. চৌধুরী জঙ্গী ভাইরাসে আক্রান্ত দেশকে শংকামুক্ত করে একটি শান্তি-সুখের বাংলাদেশে পরিণত করার প্রতিজ্ঞা গ্রহণের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় দলের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, মাহবুব আলী, সাহিদুর রহমান, বেগ মহতাব, শাহ আহম্মেদ বাদল, বিএম নিজাম, রাবেয়া বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd