তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফেলেই সিলেটে ফল বিপর্যয়!

প্রকাশিত: ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৬

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ফেলেই সিলেটে ফল বিপর্যয়!

sangbad১৯ আগস্ট ২০১৬, শুক্রবার: গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার এইচএসসিতে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। গত পাঁচ বছরের মধ্যে সিলেটে এবার পাশের হার সবচেয়ে কম। পাসের হারের পাশাপাশি কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।

এবার সিলেটে পাশের হার ৬৮.৫৯ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৩০ জন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট শিক্ষাবোর্ড এ ফলাফল প্রকাশ করে।

ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করায় এবার ফল খারাপ হয়েছে বলে মনে করেন সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

সকালে ফল ঘোষণাকালে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শামসুল ইসলাম বলেন, গতবছর ইংরেজি বিষয়ে ৮৫ দশমিক ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করলেও এবার পাস  করেছেন ৭৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে গতবছর ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করলেও এবার পাস করেছেন ৯৩ শতাংশ। এ দু’টি বিষয় আবশ্যিক হওয়ায় ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।

তবে ফল বেশি খারাপ হয়েছে এমনটা মানতে নারাজ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাসমুল ইসলাম। তার মতে, সার্বিক ফলাফল ভালই হয়েছে।  দেশের অন্যান্য বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষন করলে ফল বেশি খারাপ হয়েছে বলা যাবে না, মন্তব্য করেন তিনি।

একই মত সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল আহমদ চৌধুরীও। তিনি বলেন, সৃজনশীল বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা ভালো করতে পারেনি। বিশেষ করে ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে ভালো করতে না পারায় ফলাফল পিছিয়েছে।

জানা যায়, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ২০১২ সালে পাসের হার ছিল ৮৫.৩৭। ওই বছর ৩৭ হাজার ৩৭২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩১ হাজার ৯০৩ জন শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় ২ হাজার ৬৫ জন। ২০১৩ সালে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৯.১৩। সে বছর ৪২ হাজার ৯৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করে ৩৪ হাজার ৯ জন। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৫৩৫ জন। ২০১৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৯.১৬। ওই বছর ৫৭ হাজার ৫৬১ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে পাস করে ৪৫ হাজার ৫৬৮ জন। জিপিএ-৫ পায় ২ হাজার ৭০ জন শিক্ষার্থী। ২০১৫ সালে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৪.৫৭। সে বছর ৫৭ হাজার ৭০২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করে ৪৩ হাজার ২৮ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩৫৬ জন।

এবার সিলেট বোর্ডে ৬৩ হাজার ৯৫৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে পাস করেছে ৪৩ হাজার ৮৭০ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩৩০ জন।
ফলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারই পাসের হার সর্বনিম্ন। এছাড়া জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও গত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে এবার।

এগিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ, পিছিয়ে মানবিক : সিলেট শিক্ষাবোর্ডের এবারের ফলাফল বিশ্লেষন করে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও ভালো করেছে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে রয়েছে।

এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৮ হাজার ৫শ’৬৮জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ৭ হাজার ৪শ’ ৭৪জন। পাসের হার ৮৭ দশমিক ২৩ ভাগ। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১হাজার ৭৬ জন। মানবিক বিভাগ থেকে ৪৩হাজার ১শ’ ৪৮ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৭ হাজার ১৪ জন। পাসের হার ৬২ দশমিক ৬১ ভাগ। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৩ জন। বাণিজ্য বিভাগ থেকে ১২ হাজার ২শ’ ৪৩ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৯ হাজার ৩শ’৮২ জন। পাসের হার ৭৬ দশমিক ৬৩ ভাগ। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১শ’৬১ জন।

ছেলেরা এগিয়ে : আগের বছরগুলোতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ভালো ফলাফল করলেও এবার তাতে-ও পরিবর্তন এসেছে। এবার ছেলেদের পাসের হার ৭০ দশমিক ৩১ শতাংশ ও মেয়েদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

এছাড়া জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও এগিয়ে ছেলেরাই। এক হাজার ৩৩০ জন জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে এবার ৭৯৪ জন ছেলে ও ৫৩৬ জন মেয়ে।

শতভাগ পাস পাঁচ প্রতিষ্ঠান : সিলেটে শতভাগ পাসের সাফল্য অর্জন করেছে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো- সিলেট ক্যাডেট কলেজ, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উইমেন্স মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভাতরাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও খাজাঞ্ছিবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল