১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৪০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০১৬
বেশ কিছু দিন যাবত সিলেটের তারাপুর মৌজার স্থাপনা রক্ষা প্রভাবশালী আওয়ামীগী নেতাদের মাঠে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ- রাগীব আলীর আওয়াতাধীন তারাপুর মৌজা রক্ষা বাংলাদেশের সর্বচ্চে আদালতের রায়ের পর রক্ষা করতে মাঠে নামতে দেখা যায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের নেতাদের পাশা পাশি জামায়াত-শিবির ও বিএনপির অনেক নেতা কর্মীদের। আবার অনেকে বলছেন জামায়াত সরাসরি মাঠে না নেমে পিছনে থেকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতা কর্মীদের ব্যবহার করে স্থাপনা রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে। স্থপনা রক্ষা মাঠে রয়েছেন আওয়ামীলীগ-বিএনপি ও জামায়াত এছাড়াও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ, সোমবার থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের আরেকটি গ্র“প স্থপনা রক্ষা মাঠে নেমেছেন
তবে এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন। তাদের দাবী স্থপনা রক্ষা নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছে। কেই বা রাগীব আলীর কাছ থেকে অর্থ বাণিজ্য করছেন আবার স্থপনার রক্ষার কথা বলে বাসা –বাড়িতে গিয়ে চাঁদা উত্তলন করছেন। কারণ যানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী , অর্থমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, সাংবাদ সম্মেলন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও কর্মসূচির খরচের জন্য টাকা উত্তেলন করা হচ্ছেন বলে জানান।
আবার অন্যপক্ষ বলছেন প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে কোন খরচের প্রয়োজন হয় না। আমাদের সমস্য আমাদের নিরসন করতে হবে। প্রতারকদের কাছে কোন ধরনের টাকা না দেওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের আহবান জানান। তবে এখন পর্যন্ত সকল কর্মসূচি দেখে মনে হয় তারাপুর মৌজা স্থাপনা রক্ষায় একাধিক আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াত নেতা মাঠে রয়েছেন।
গত ৭ আগস্ট সাংবাদিক সম্মেলনের সংবাদটি হুবহুব তুলে ধরা হলো:
এক ব্যক্তির জালিয়াতির কারণে দুই যুগ ধরে বসবাস করে আসা তারাপুর মৌজার সাড়ে ৩ হাজার নিরিহ পরিবারকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটের তারাপুর এলাকাবাসী। রোববার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আহবান জানান। তারাপুর এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এম শাহরিয়ার কবির সেলিম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে তারাপুর মৌজায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার জায়গা-জমি ক্রয় করে বসবাস করে আসছে। যথাযথ নিয়ম মেনে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন নিয়ে বসতভিটা নির্মাণ করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে কখনো কোন আপত্তি উত্থাপিত হয়নি। জায়গা রেজিস্ট্রি অথবা গ্যাস-সংযোগ প্রদানে এলাকাবাসী কখনো বাধার সম্মুখিন হননি। কিন্তু দীর্ঘ দুই যুগ পর গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নোটিশ পেয়ে এলাকাবাসী কিংকর্তব্যবিমুঢ়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য গত ২ আগস্ট জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তি খবরে এলাকার লোকজন চরম উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। হঠাৎ করে বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিলে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে দাবি করেন তিনি।
১৯ জানুয়ারি মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে রাষ্ট্র বনাম রাগীব আলীর পুত্র আব্দুল হাইর মামলার রায়ে তারাপুর এলাকায় মেডিকেল কলেজসহ আবাসিক-বাণিজ্যিক স্থাপনা অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ববর্তী সেবায়েতকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের রায়ের প্রতি এলাকাবাসী শ্রদ্ধাশীল বলে দাবি করেন শাহরিয়ার কবির সেলিম। বলেন, এলাকার সাধারণ অধিবাসীরা এ মামলার সম্পর্কে কিছুই জানি না। মামলার কারণ সম্পর্কে অবগত না থাকায় রাষ্ট্র বনাম আব্দুল হাই এর মামলায় উক্ত এলাকার অধিবাসী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ লাভ করতে পারেননি। তাই উচ্ছেদের বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী অন্ধকারে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, অন্যের জালিয়াতির কারণে আজ নিরপরাধ জনগণ চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। উচ্ছেদ আতঙ্কে এলাকায় চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেক যুবক-যুবতীর বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। জাতির শ্রেষ্ট সন্তান অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বসতভিটা এখানে রয়েছে। ভিটেমাটি হারালে সবাই বাস্তহারা হয়ে পথে বসবে। এই ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। এখানেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে চান এলাকাবাসী।
তিনি বলেন, তারাপুর মৌজার চা বাগানের ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েতকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি রায় বাস্তবায়নের জন্য উচ্ছেদ না করে মানবিক কারণে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে। সেই সাথে বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত মানবিক কারণে গ্যাস-বিদ্যুৎ বিচ্ছন্নের গণবিজ্ঞপ্তি স্থগিত রাখার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রতি আবেদন জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলে, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক রাজা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা জামাল পাশা, কাউন্সিল ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ, সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ, চেয়ারম্যান শহীদ আহমদ, ফজলুর রহমান ফজলু, করিম উল্লাহ হেলাল, শামসুদ্দিন খান, সেলিম আহমদ সেলিম, নজরুল ইসলাম নজু, সিথিল দেব, অধ্যাপক আবু তাহের, ফখরুল ইসলাম ফারুক, আবুল মনসুর টিপু, সাব্বির খান, মোনায়েম খান ময়নুল, ইউপি সদস্য শফিকুর রহমান, মকবুল হোসেন খান, কাউন্সিলর রেবেকা বেগম রেনু, কাউন্সিলর আমজাদ হোসেন খান, তুরণ চৌধুরী, আব্দুর রউফ, ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন, দবির খান, মনসুর খান বাদশা, আখতারুজ্জামান আখতার, আব্দুল আজিজ মনু, ইকবাল হোসেন লস্কর, মো. সাহাবুদ্দিন, বাহারুল ইসলাম রিপন, খলিল খান, মাসুদ খান সাজন, শরিফ বক্স, এখলাছ হোসেন, মো. আব্দুল্লাহ, জিল্লুর রহমান দিলু, শেখ মুসা, আব্দুর রহিম, শহিদুর রহমান মাস্টার, সাফায়েত খান, আজিজ খান সজিব, সৈয়দ মোজাক্কের আলী, আব্দুল মন্নান, আলা উদ্দিন, ডা. শামিম, সেবুল মিয়া, বশির খান লাল, গোলাম কিবরিয়া খান, জায়েদুর রহমান জায়েদ প্রমুখ।
৮ আগস্ট রাতে আরেকটি পক্ষে মতবিনিময় সভার প্রেস বিজ্ঞপ্তি হুবহুব তুলের ধরা হলোঃ
তারাপুর মৌজার বসতভিটা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষার দাবীতে গতকাল সোমবার রাত ৮টায় তারাপুর বাগান সংলগ্ন মাঠে বৃহত্তর তারাপুর মৌজাবাসীর উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট মনিরুজ্জামান সেলিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সমাজসেবক হাজী সেলিম আহমদ, হেলাল উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি কামাল আহমদ, বিশিষ্ট সমাজসেবক সুদীপ দেব, শ্রমিক নেতা মকবুল হোসেন খান, আজমল হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর চৌধুরী, যুব নেতা শাহেদ আহমদ, সিরাজ খান, মোহনা সমাজকল্যাণ সংস্থার আহ্বায়ক রতন মজুমদার, যুবনেতা আজাদ হোসেন, আব্দুল মুনিম, শ্যামল সেনাপতি, দুলুল তালুকদার, নিখিল দে, সুমিত দে, শাপলা সংঘের সাধারণ সম্পাদক নিপেন্দ্র কুমার দেব নিপু, সেলিম আহমদ, মোঃ শাহজাহান, সহির আলী মেম্বার, আরব মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার রঞ্জিত চৌধুরী, মনু চন্দ, পারভেজ আহমদ, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, মনিরুজ্জামান মনু, শ্যামল সিংহ, সম্রাট কর প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বসতভিটা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং মানবিক কারনে গ্যাস, বিদ্যুৎ লাইন না কাটার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, অন্যের জালিয়াতির কারণে আজ নিরপরাধ তারাপুরবাসী চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। উচ্ছেদ আতঙ্কে এলাকায় চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। জাতির শ্রেষ্ট সন্তান অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বসতভিটা এখানে রয়েছে। ভিটেমাটি হারালে সবাই বাস্তহারা হয়ে পথে বসবে। এই ভিটেমাটি ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বক্তারা, যারা দেবত্তোর সম্মতি জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করেছেন তাদেরকে ভুক্তভোগী মানুষের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জোর দাবী জানান। বক্তারা মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বসতভিটা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহ বহাল রাখতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় তারাপুর মৌজাবাসীর বতসভিটা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে বিভিন্ন কর্মসূচীর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি পেশ, মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মহিতের সাথে সাক্ষাত, সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও আমরণ অনশন।
দীর্ঘ দুই যুগ ধরে তারাপুর মৌজায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার জায়গা-জমি ক্রয় করে বসবাস করে আসছে। যথাযথ নিয়ম মেনে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন নিয়ে বসতভিটা নির্মাণ করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে কখনো কোন আপত্তি উত্থাপিত হয়নি। জায়গা রেজিস্ট্রি অথবা গ্যাস-সংযোগ প্রদানে এলাকাবাসী কখনো বাধার সম্মুখিন হননি। কিন্তু দীর্ঘ দুই যুগ পর গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নোটিশ পেয়ে এলাকাবাসী কিংকর্তব্যবিমুঢ়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য গত ২ আগস্ট জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তি খবরে এলাকার লোকজন চরম উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। হঠাৎ করে বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিলে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, তারাপুর মৌজার চা বাগানের ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েতকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি রায় বাস্তবায়নের জন্য উচ্ছেদ না করে মানবিক কারণে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
পরবর্তীতে পড়–ন ‘ আওয়ামীলীগ,বিএনপি ও জামায়াতের কোন কোন নেতা মাঠে কাজ করছেন নাম সহ’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D