দাবি না মানলে ১ ডিসেম্বর থেকে সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৬

দাবি না মানলে ১ ডিসেম্বর থেকে সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারশেন, সিলেট বিভাগীয় কমিটি। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি না মানা হলে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করা হবে। রোববার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষনা দেন কমিটির নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দিন রফিক।

বক্তব্যে দাবি প্রসঙ্গে বলা হয়, দীর্ঘদিন থেকে দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংস্কার ও অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। ফলে দিন দিন টার্মিনালের অবস্থা নাজুক হচ্ছে। সিলেটের কেন্দ্রীয় ট্রাক ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের নামে দীর্ঘদিন থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অনুযায়ী সিলেটের সকল পৌরসভায় যানবাহন থেকে পৌর ট্যাক্স আদায় বন্ধ করা এবং সিলেটের সকল সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ করার নির্দেশনা থাকলেও পরিবহণ শ্রমিকদের কাছ থেকে পৌর ট্যাক্স ও সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে।
রিকুইজিশনকালে গাড়ির প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও চালকদের খোরাকিসহ রাতে থাকার জায়গা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। মামলায় অতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ করা এবং ট্রাফিক অফিসে মালিক ও চালকদের বসার জায়গা দেয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। সিলেট বিভাগের সকল রাস্তা সংস্কার করা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোবাইক, মোটরবাইক চলাচল বন্ধ করার আশ্বাস আজও আলোর মুখ দেখেনি।

বক্তব্যে বলা হয়, জাফলং, বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার পরিবহণ শ্রমিককে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। বিশেষ করে কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় কিস্তিতে ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান ক্রয় করে চালকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তারা সময়মতো কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক গাড়ি তল্লাশির নামে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। ছাতক থানার গোবিন্দগঞ্জে সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে ৬০ গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ছাতক থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি মামলা গ্রহণ করেননি। ওসির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলা হয়, ছাতক থানার লাফার্জ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে ২৩ জন গাড়ি চালককে অকারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একের পর এক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এমন অন্যায় বন্ধ করে তাদেরকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। এছাড়া অটোটেম্পো গাড়িগুলো ডাম্পিং সিদ্ধান্ত বাতিল এবং ইঞ্জিনচালিত রেজিস্টেশনবিহীন ট্রলি দ্বারা মালামাল বহন করা বন্ধ করার দাবি জাননো হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে শ্রমিক ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ জানান, দীর্ঘদিন থেকে শ্রমিকদের উন্নয়নে এবং যাত্রীদের কল্যাণে সংগঠনটি গঠনমূলক আন্দোলন করে যাচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বেশ কিছু দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েও তা বাস্তবায়ন করছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারশেন, সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধ সেলিম আহমদ ফলিক, যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান ওদুদ, কার্যকরি সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকরি সভাপতি (ট্রাক) আব্দুস ছালাম, বিভাগীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ সামছুল হক মানিক, সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাহার উদ্দিন, ট্রাক পিকআপ কাভার ভ্যান শ্রীমঙ্গল শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর, পরিবহন নেতা ইনছান আলী, আপ্তাব উদ্দিন, বিনয় ভ’ষন দেব, বাবলু আচার্য্য, আকবর আলী, ইজ্জাদুর রহমান, খলিলুর রহমান, মটুক মিয়া, সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল