নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী ও সিলেট বিএনপি

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০১৬

নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী ও সিলেট বিএনপি

Elis 07বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি এম. ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৪ বছর এক মাস । ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকার বনানী থেকে ব্যক্তিগত গাড়ীচালক আনসার আলীসহ রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হন তিনি। এরপর দেশব্যাপী গড়ে উঠে কঠোর আন্দোলন। ইলিয়াসের ভালবাসায় প্রাণ দেন বিশ্বনাথের তিন বিএনপির কর্মী। ফিরে পাওয়ার আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা-মামলা শিকার হন হাজার হাজার বিএনপি-জামায়াত কর্মী ও সাধারণ মানুষ। মামলায় কারাবরণ করেন বিএনপি নেতাকর্মীসহ শত শত সাধারণ মানুষ। তবুও আন্দোলন থেকে পিছু হঠেনি ইলিয়াস প্রেমিরা। ২৩ এপ্রিল রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্বনাথ উপজেলা সদর। সারা দেশে আতঙ্কের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পায় এই উপজেলা। সেদিন ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবীতে আন্দোলন করতে গিয়ে ত্রি-মুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান জাকির, মনোয়ার ও সেলিম নামের তিন ইলিয়াস সমর্থক। কিন্তু একে একে নিখোঁজের চার বছর পূর্ণ হলেও আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান দিতে পারেনি দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এপরও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস’র জন্য অন্তহীন অপেক্ষা চলছে বিশ্বনাথবাসীর। সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান মারা যাওয়ার পর এম ইলিয়াস আলী হয়ে উঠেন সিলেট বিএনপির একমাত্র কান্ডারী। শুধু সিলেট নয়, গোটা বিভাগের একজন অবিভাবক হিসেবে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ অবস্থায় পরিবার থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর পেশার মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। আজও জানা যায়নি তিনি কোথায়? তদুপরী তাঁর নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এখনো বিশ্বাস করেন ইলিয়াস আলী জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় আবার জনতার মাঝে ফিরে আসবেন। ইলিয়াসকে ফিরে পেতে আন্দোলনের নানা কর্মসূচীর ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। চলতি মাসে নবগঠিত সিলেট জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে মাসব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই জনপ্রিয় নেতাকে ফিরে পাওয়ার দাবী জানিয়ে গত ১০ এপ্রিল জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

Elis 03কিন্তু ইলিয়াস নিখোঁজের পর স্থানীয় বিএনপিতে দেখা দেয় দ্বিধা বিভক্তি। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে একাধিকবার হামলা, সংঘর্ষ ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। ফলে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। এ সুযোগে রাজপথের দখল নেয় ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগ। এবারের ইউপি নির্বাচনেও বিএনপির দলীয় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ইলিয়াস আলীর নিজ ইউনিয়ন অলংকারী ও রামপাশা ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী দুই প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন ইলিয়াস নিখোঁজের পর যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিএনপিতে প্রকাশ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির রাজপথের পরীক্ষিত কর্মীদের মনোনয়ন না দিয়ে দুই ইউনিয়নে জন-বিচ্ছিন্ন দুই প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এসকল নেতাকর্মীও সমর্থকরা ত্যাগী নেতা হিসেবে বিদ্রোহীদের পক্ষেই নিরলসভাবে মাঠে কাজ করছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল