নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে: খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০১৬

নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে: খালেদা জিয়া

65071_0দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ‘ডান-বাম’ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠূ নির্বাচন হতে পারে না মন্তব্য করে তিনি  বলেন, তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে।

শনিবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারস এই আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা ঐক্যের ডাক দিয়েছি। আমরা ভুলে গেছি কে বাম কে ডান, কে কি। আমরা চাই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক। জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র এনেছিলেন, সেই পথ ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি।”

আওয়ামী লীগ ডিজিটাল কায়দায় ব্যাংক লুট করছে অভিযোগ করে বিএনপির প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালে অতীতেও ব্যাংক লুট হয়েছে। এবার ডিজিটাল কায়দায় ব্যাংক লুট হয়েছে। তাই নতুন প্রজন্মকে ‘অন্যায়-অত্যাচার’ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবানও জানান খালেদা জিয়া।

ছাত্রমৈত্রীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ঢালী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম বাবু এবং ভাসানী স্মৃতি সংসদের সহ-সভানেত্রী ন্যান্সি রহমানের বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। তারা খালেদা জিয়ার হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর, কুমিল্লার মতলব ও পাবনা সদরের কয়েক‘শ নেতা-কর্মী-সমর্থক অংশ নেন।

নবাগতদের অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ যে প্রগতিশীল নেতারা আজকে যোগদান করলেন, তারা এ দলে কিসের জন্য যোগ দিয়েছেন? আমাদের দেশটাকে বাঁচাতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের কল্যাণ করতে হবে।”

‘‘ যারা আজকে বিএনপিতে যোগদান করলেন আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। আপনাদের যোগদানে আমরা উপকৃত হয়েছি।”

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ নামক দলটির দ্বৈত্যদের হাত থেকে দেশটাকে বাঁচাতে হবে। এরা মানুষ খেকো।”

‘‘ এরা(আওয়ামী লীগ) মানুষকে শুধু হত্যা করতে জানে, গুম করতে জানে, মানুষের সম্পদ কেড়ে নিতে জানে। আর মানুষের ওপর জুলুম অত্যাচার করতে জানে। দেশ ও জনগন এদের কাছে বড় কথা নয়। এদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমি ক্ষমতায় থাকবো, সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবো।”

প্রবীন সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার ও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ তার লেখনি হয়ত তাদের গায়ে জ্বালা হতো। সেজন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আজ তাকে আটক করা হয়েছে, বন্দি করা হয়েছে। এখন রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আমরা কোন দেশে আছি।”

সাংবাদিক শফিক রেহমান, আমার দেশ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, ইটিভি‘র চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার অবিলম্বে মুক্তি দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

বিএনপিকে মামলা দিয়ে ধ্বংস করা যাবে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘ আজ বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। প্রগতিশীল নেতারাও আজ বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন।”

সরকারের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের দাবি ছোট্র। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তাই প্রমাণ হয়েছে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আসুন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে নির্বাচন করি। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হউক, এটাই আামদের দাবি। এই দাবিতে আমরা অটল থাকবো।

অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যোগদানকারী নেতা আতাউর রহমান ঢালী, জহুরুল ইসলাম বাবু ও ন্যান্সি রহমান বক্তব্য রাখেন।

এতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল হুদা, নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, সানাউল্লাহ মিয়া, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আলী নেওয়াজ খৈয়াম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, পাবনা জেলা সভাপতি কে এস মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল