৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০১৬
সংস্কৃতি বলতে বুঝায় একটা দেশের মানুষের আচার ব্যবহার,খাবার দাবার,পোষাক পরিচ্ছেদ,খেলাধুলা, বিনোদনসহ অনেক কিছু যার মাধ্যমে নিজের দেশ কে বিশ্ব দরবারে গৌরবের সাথে পরিচিত করা যায়।আমাদেরও নিজস্ব সংস্কৃতি আছে যার মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে বুঝতে পারি আমরা বাংঙ্গালী। কিন্তু আজ আধুনিকতার ছোয়ায় আর পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুকরণ করতে গিয়ে হারাতে বসেছি আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি।হারাতে বসেছি বললে মনে হয় ভূল হবে,বলা উচিত হারিয়ে হারিয়ে ফেলেছি। বাঙ্গালী জাতির শত কছরের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।এই দিনে সারা বাংলায় বসত বৈশাখি মেলা প্রাণ জুড়ানো বাংলা গানের আসর,কিন্তু আজ হারিয়ে যাচ্ছে মেলা তথা বৈশাখি গান।আগে পাড়া মহল্লায় বসত দেশীয় বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বাউলদের মন মাতানো গানের আসর।নদীমাতৃক পূর্ব বঙ্গে ভাটিয়ালী,উত্তর বঙ্গে ভাওয়াই,পশ্চিম বঙ্গে কীর্তন ও বাউল জারি সারি, পল্লীগীতি। এসব গানের মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করা যেত মা-মাটি মানুষের গন্ধ।এখন বাউলদের খুজে পাওয়াই দুষ্কর,কারণ আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি। এখন আমরা বাউলদের জায়গায় স্থান করে দিয়েছি বিদেশী হেভি মেটাল গান। যে গানে না আছে শিক্ষার কিছু না আছে নাড়ির টান।এখনত পাড়া মহল্লায় সাউন্ডবক্সে বিদেশী গান ছাড়া পুরো আয়োজন বৃথা মনে হয়। অথচ আমাদের আছে বিশ্বমানের আব্বাস উদ্দিন,লালন ফকির,শাহ আব্দুল করিম,আব্দুল আলীম,রাধা রমন দত্ত,হাছন রাজা সহ অনেক খ্যাতনামা গুনি শিল্পী। বাংলার মানুষ বিনোদন ভালবাসে আর তাই তারা যাত্রা পালা,বায়োস্কোপ,পুতুল নাচ কিংবা গানের আসরে মনের খোরাক জোগাত।কিন্তু সে যাত্রা পালার অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির পথে।তার অন্যতম কারণ অপসংস্কৃতির আগ্রাসন। বাংলার অন্যতম একটি উৎসব হচ্ছে দামাইল কিন্তু সেটাও হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি থেকে,একসময় গ্রাম বাংলার বিয়ের অনুষ্টান সহ অন্যান্য অনুষ্টানে দামাইল ছিল খুবই জনপ্রিয় আর আজ আমরা এই দামাইল জায়গায় স্থান করে দিয়েছি বিদেশীদের ভিক্ষা দেয়া রাম্প আর ডিজে নামক নোংরা সংস্কৃতি। তাহলে কি রবী ঠাকুর ঠিকই বলেছিলেন,”সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী রেখছ বাংঙ্গালী করে মানুষ কর নি” পাঠক আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইল। বাংলার জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু,কিন্তু নতুন প্রজন্ম হা-ডু-ডু খেলা নিজ চোখে দেখেছে বলে মনে হয় না। একসময় বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল হেমন্তের নবান্ন উৎসব,হেমন্তে যখন সোনালী ফসলে ছেয়ে যেত বাংলার মাঠ আর কৃষকেরা সেই ফসল গোলায় তুলতে ব্যস্ত তখন কৃষাণীরা নতুন চাল দিয়ে তৈরী করত বাহারী রকমের পিঠা-পায়েস।আজ হারিয়ে যাচ্ছে নবান্ন উৎসব,চৈত্র সংক্রান্তি সহ বাংলার শত রকমের সংস্কৃতি। এই দায় কি আমরা এড়াতে পারব?নতুন প্রজন্মের কাটগড়ায় দাড়ালে নির্গাত আমাদের কে মাথা নিচু করে থাকতে হবে।আর এটা হবে আমাদের ভূলের কঠিন প্রায়শ্চিত্ত। তবে আসুন এই অপসংস্কৃতির লেলিহান থেকে বাচাই আমাদের প্রাণের সংস্কৃতি কে আর শির উচু করে দাড়িয়ে বলি, আমি গর্বিত আমি বাংঙ্গালী। মফিজুর রহমার মফি সাধারণ সম্পাদক জালালাবাদ প্রবাসি কল্যাণ পরিষদ, সিলেট জেলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D