১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০১৬
ফেলে যাওয়া ফসলের ক্ষেত, জনশূন্য আগুনে পোড়া গ্রাম। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় এই দৃশ্যই এখন চোখে পড়ে।
গত দু মাস সাংবাদিক অথবা সাহায্য সংস্থার কর্মীদের ঐ অঞ্চলে যাওয়া নিষিদ্ধ।
তবে বিবিসি একজন বার্মিজ নাগরিককে ক্যামেরা দিয়ে সেখানে পাঠিয়েছিল। তিনিই গোপনে ছবিগুলো তুলেছেন। দেখা পেয়েছিলেন অল্প যে কজন রোহিঙ্গা মহিলার তাদের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
বিবিসি’র হয়ে রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামের ছবি তুলেছেন ঐ ব্যাক্তি যেটি দু মাস আগেও ছিল রোহিঙ্গা মুসলিম ভর্তি একটি জনপদ। রোহিঙ্গারা চলে গেছে। গ্রামের ভেতর এখন বার্মিজ সৈন্য।
রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর ভেতরে দিয়ে কয়েক ঘণ্টা চলার পর কজন রোহিঙ্গা নারীর দেখা পেয়েছিলেন বিবিসির ঐ প্রতিনিধি। সাথে কজন শিশু। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাদের স্বামীরা কোথায় — এই প্রশ্নে তাদের একজন উত্তর দেয় ‘আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।’
অন্য আরেক মহিলা জানায় তার স্বামীকে সৈন্যরা ধরে নিয়ে গেছে।
এক হিসাবে গত কয়েক সপ্তাহে ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তচ্যুত হয়েছে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
অনেক রোহিঙ্গা তাদের নিজেদের দুর্দশার ভিডিও তুলে বিবিসির কাছে পাঠিয়েছে।
ফুটেজে এক মহিলাকে বলতে শোনা গেছে তার মেয়ে, পুত্রবধূ এবং বোনকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে।
কে করেছে ? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন –মিলিটারি।
“ব্রা’র ভেতর টাকা লুকিয়ে রেখেছিলাম। সেগুলো জোর করে বের করে নিয়েছে।”
ক্যামেরার ফুটেজে আরেক মহিলাকে বলতে শোনা যায় — “ঘর থেকে বের করে ধানক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। একবার নয়। বারবার। আমরা চিৎকার করেছি। বাঁচাবার কেউ ছিলনা।”
অবশ্য এই মহিলারা যা বলছেন নিরপেক্ষভাবে তা যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে এই ফুটেজটি এসেছে লংডন নামক একটি গ্রাম থেকে। ঐ গ্রাম থেকে অন্যান্য সূত্র থেকেও হত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রেঙ্গুন থেকে বিবিসির জোনা ফিশার জানাছেন, বিদেশী কূটনীতিকদের মনোভাব দ্রুত বদলাচ্ছে।
সংশয় সত্বেও এতদিন তারা অং সান সুচির বিপক্ষে কোনো কথা বলেননি। কিন্তু কূটনীতিকদের অনেকেই এখন বিস্মিত হচ্ছেন যে রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে সেনাবাহিনী এবং মিস সুচি একই সুরে কথা বলছেন।
মিস সুচির অফিস থেকে এখন নিয়মিত ব্যাখ্যা দেওয়া হচেছ যে সেনাবাহিনী আইন মেনেই কাজ করছে। কোনো নির্যাতন তারা করছে না। বরঞ্চ রোহিঙ্গারাই তাদের বাড়িতে আগুন দিচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেভিড ম্যাথিসন বিবিসিকে বলেন, মানবাধিকারের রক্ষক হিসাবে যে উঁচু অবস্থান তার ছিল, তা থেকে অং সান সূচি অনেকটাই সরে গেছেন।
“তিনি কঠোর একজন রাজনীতিবিদ যাকে নির্মম একটি রাজনৈতিক পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর মত নির্মম একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা করে চলতে হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি — যে মূল্যবোধ তিনি ধারণ করতেন, তাকে তিনি সরিয়ে রেখেছেন।”
তবে মিস সুচি চাপের ভেতর পড়েছেন। সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছেন। তবে তার প্রধান করা হয়েছে সিনিয়র একজন জেনারেলকে।
ফলে ঐ তদন্ত যে নিরপেক্ষ সে সম্ভাবনা কম। আর সে কারণে রাখাইন রাজ্যে আসলে কি ঘটছে তার পুরো সত্য হয়ত জানা যাবেনা।-বিবিসি বাংলা
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D