২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০১৬
হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের ১ কোটি ১৮ লাখ টাকার অর্থ তসরুপে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিজিত কুমার ভট্টাচার্যকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে বদলী করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার সিনিয়র সহকারি সচিব আবু কায়সার খানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বছরের ৫ এপ্রিল বিজিত ভট্টাচার্য হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ থেকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বদলী হন। বৃন্দাবন কলেজে তিনি অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল। অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার পর ৬ বছর এখানে কর্মরত ছিলেন। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ বদরুজ্জামান চৌধুরীকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক বিজিত নয়া অধ্যক্ষ বদরুজ্জামানের কাছে দায়িত্ব অর্পণ না করে তড়িঘড়ি করে উপাধ্যক্ষ শফিউল আলম চৌধুরীর কাছে দায়িত্ব দিয়ে চলে যান।
অধ্যক্ষ বদরুজ্জামান কলেজের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই বিভিন্ন খাতের আয় ব্যয়ের হিসাব গোঁজামিল পেয়ে ওই বছরের ২১ মে একাডেমিক ও স্টাফ কাউন্সিলের সভা ডেকে বিষয়টি অবহিত করেন। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণিত বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের আর্থিক আয় ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষা করে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩১টি খাতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ১৮১ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ১১ লাখ ১২ হাজার ৮১৩ টাকা।
ওই সময়ের মধ্যে ১ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৯৫৭ টাকার লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১১ টাকা ব্যাংক হিসেবে স্থিতি থাকার কথা থাকলেও তা ছিলনা। ৩১টি খাতের মধ্যে সবগুলো খাতেই কোন না কোন অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করে নিরীক্ষা কমিটি। কমিটি ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকার কোন হদিস পায়নি।
অর্থ তসরূপ সংক্রান্ত সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় দৈনিক প্রভাকরে। পরে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এ প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রসময় কীর্ত্তনীয়া, শিক্ষা পরিদর্শক এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম এবং সহকারি শিক্ষা পরিদর্শক রাকিবুল হাসানের সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে। তদন্ত টিম গত বছরের ৯ আগস্ট কলেজ পরিদর্শন করে এবং অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে। তদন্তের ৪ মাস পর গত ৮ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা হয়।
প্রতিবেদনে আদায় করা অর্থ ব্যাংকে জমা না দেয়া, আয় ব্যয় হিসেবে গরমিল, প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকা জমা না দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া বিজিত ভট্টাচার্য বিধি পরিপন্থিভাবে কলেজের টাকা ব্যয় করতেন এবং ক্যাশিয়ার বাবুলের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল ছিলেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) প্রফেসর জুলফিকার আলী ও সহকারি পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) আশেকুল হকের সমন্বয়ে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাদের রিপোর্টে তহবিল তসরুপের কথা উল্লেখ ছাড়াও অধ্যক্ষ বিজিতকে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্যত্র বদলি করার সুপারিশ করেন।
অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনও এ বিষয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এদিকে তসরুপকৃত অর্থের মধ্যে বিজিত ভট্টাচার্য ৫২ লাখ টাকা কয়েক দফায় জমা দিয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে।
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে বিজিত ভট্টাচার্যকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক পদে পদায়ন করার ফলে তার পদাবনতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের আদেশ হওয়ার আগে এ সংক্রান্ত নথিতে শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সই করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D