ভূমি রক্ষা: সিলেটে একই প্লাটফর্মে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও জামায়াত!

প্রকাশিত: ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০১৬

ভূমি রক্ষা: সিলেটে একই প্লাটফর্মে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও জামায়াত!

aw bnp jamatসিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গণে সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতি ব্যবসায়ী নেতাদের সুদৃঢ় ঐক্যের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে আলোচিত হয়েছে। রাজপথে নানা কারণে এসব দলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলেও অন্ধর মহলের চিত্র ছিল ভিন্ন। ব্যবসায়িক স্বার্থে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের সুবিদাভোগী নেতারা আপদে-বিপদে একে অপরের রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করেছেন। যা বিভিন্ন সময়ে আলােচিত হয়েছে।
কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সরকার জামায়াত-বিএনপির ব্যাপারে হার্ডলাইনে থাকায় ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা মন না চাইলেও দলে টিকে থাকার জন্য (পদ-পদবি ধরে রাখতে) জামায়াত-বিএনপিকে অনেকটা এড়িয়ে চলছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পর আবার সেই পুরেনা ঐক্ষ্যের দেখা মিলল সিলেটের রাজপথে। সিলেটের এই মুহুর্তে সবচেয়ে আলোচিত তারাপুর চা-বাগানের অবৈধ দখল টিকিয়ে রাখার ইস্যুতে কাতারবন্ধী হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা।তারা তাদের অনুসারীদের নিয়ে দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। যদিও এই কর্মসূচিতে জামায়াতের ব্যবসায়ী নেতাদের দেখা যায়নি। তথাপি এই কর্মসূচি তাদের ইশারা ও অর্থায়নে হয়েছে-এমন গুঞ্জণ নিয়ে সর্বত্র আলোচনা-সমালোচার ঝড় বইছে।
বৃহস্পতিবার সিলেটবাসীর ব্যানারে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, মদন মোহন কলেজ ক্যাম্পাস, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন করেন তারা।
নগরীর মদিনা মার্কেট থেকে সুবিদ বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বৃহত্তর পাঠানটুলা এলাকার মুরব্বি আবদুর রাজ্জাক খান রাজা মিয়া এবং পরিচালনা করেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম আহমদ।
এতে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াস, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জগদীশ চন্দ্র দাস, টুকেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ আহমদ, রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. এটিএমএ জলিল, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, ফজলুর রহমান, অধ্যাপক আবু তাহের, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার কবির সেলিম, অ্যাডভোকেট বদরুল হক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাব্বির খান, ব্যবসায়ী করিম উল্লাহ হেলাল, শ্রমিক লীগ নেতা মকবুল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আহমদ, শফিকুর রহমান মেম্বার, শিথিল দেব, সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম নজু, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শাহাদাত খান দবীর ও রেহান উদ্দিন, স্বেচ্ছা সেবকদল নেতা আজিজ খান সজিব,রাসেল আহমদ,ছাত্রলীগ নেতা সাফায়াত খান, দিলওয়ার আহমদ, মোনায়েম খান ময়নুল প্রমুখ।
সভায় তারা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া তারাপুর মৌজায় বসবাসকারীদের বাসস্থান, কর্মসংস্থানের সুযোগবঞ্চিত না করা এবং মেডিকেল কলেজ, মদন মোহন কলেজের বিল্ডিং রক্ষাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষায় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি কামনা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারাপুর চা বাগানের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার হিন্দু দেবোত্তর সম্পত্তির একটি অংশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের ব্যবসায়ী নেতাদের দখলে রয়েছে। যেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বাসস্থানসহ নানা স্থাপনা। প্রশাসন কর্তৃক চিহৃিত এসব অবৈধ স্থাপনা টিকিয়ে রাখতেই বৃহস্পতিবার ত্রি-দলীয় রাজনৈতিক সিণ্ডিকেট মাঠে নেমেছে। যদিও যদ্ধাপরাধের তকমা একটি দলের গায়ে থাকায় এদলটির ব্যসায়িক নেতারা রাজপথে ছিলেন না। কিন্তু কর্মসূচি সফল ও নানা ব্যনারে তা অব্যাহত রাখতে অর্থ যোগান দিয়ে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জণ চলছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল