৮ই আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২০
উজ্জ্বল চৌধুরী
অনিয়ম আর দুঃশাসন মুক্তির অগ্রদূত হিসেবে এ জনপদে মহান রাব্বুল আলামীনের কুদরতে আগমন ঘটে হযরত শাহ জালাল (র.) ইয়ামনী ও তার প্রধান সেনাপতি তরফ রাজ্য বিজয়ী মহান ইসলামী বীর পুরুষ সিপাহসালার হযরত শাহ সৈয়দ নাসির উদ্দিন (র.) এর। যিনি ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে সৌদি আরবের মদীনা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বাগদাদে বসবাস করা নাসির উদ্দিন (র) সেখান থেকে দিল্লীতে এসে সুলতান আলাউদ্দিন খিলজীর অধীনে ফৌজ বিভাগে যোগদান করেন। দিল্লীর সম্রাট তার কামালিয়াতের পরিচয় পেয়ে শাহী সৈন্য বাহিনীর নেতৃত্বে গ্রহণ ক্রমে সিলেট অঞ্চলকে বিজয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
সিলেট বিজয়ী হযরত শাহ জালাল (র.)-এর সাথে পথিমধ্যে মোলাকাত হয় এবং মুসলমানদের উপর গৌড় গোবিন্দের অত্যাচারের সংবাদে ব্যথিত হয়ে শাহী সৈন্যদের সঙ্গে যোগদান করতে রাজি হয়ে ০৩ হিজরী ১৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিলেট অঞ্চলকে জয় করেন। সে ইতিহাস সবার জানা, যাই হোক আমার আজকের লিখার বিষয় স্বাধীনতা পরবর্তী বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রখ্যাত শালিসি ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব আলাউদ্দিন খানের পুত্র এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দিন (র) কে পিতৃস্নেহে যিনি পথ নির্দেশনা দিতেন, চলার পথে প্রেরণা দিতেন তিনি হলেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি আর কাকতালীয় ভাবে এডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের পিতার নাম ও আলাউদ্দিন খান। আর তাই শৈশব থেকেই পিতার ব্যক্তিত্ব, গণমুখী চরিত্র, দেশপ্রেম সর্বপরি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা দেখেই মূলত গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতিতে তারুণ্যের প্রথম প্রহরেই অংশগ্রহণ করেন নাসির। তার চাচা শাহাদাত হোসেন খান ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামি লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য।তাদের দেখেই পারিবারিক আবহে নাসির হয়ে উঠেন কল্যাণময় রাজনীতির ধারক।
সমসাময়ীকরা যখন আড্ডা, পিকনিক আর বোম্বে হিরো অনিল কাপুর, শ্রীদেবীতে মত্ত তখন নাসির উদ্দিন খান লাল সিডিআই হোন্ডা নিয়ে মুজিব আদর্শের দ্যুতি ছড়িয়ে ছাত্রলীগের কর্মী সংগ্রহ আর সভা, সমাবেশে অংশ নিয়ে জননেত্রীর ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যস্থ। সামরিক জান্তার ভয়ে সহযুদ্ধারা যখন একে একে প্রেস রিলিজে দস্তখত করে পিতা মুজিবের নিজ হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগে ছাড়ছেন ঠিক সেই সময়ে শিক্ষা, শান্তি, আর প্রগতির পতাকাকে সমুন্নত রাখতে নাসির উদ্দিন খান দায়িত্ব নেন তৎকালীন শহর ছাত্রলীগ আর আজকের মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়কের।
জেল, জুলুম, আর হুলিয়া অপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়া নাসির আপন যোগ্যতা বলেই যায়গা করে নেন পরবর্তী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। একদিকে প্রশাসন আর অন্যদিকে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের উৎপীড়নে তার শিক্ষা জীবনে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও আদর্শচ্যুতি ঘটাতে পারেনি। আর তাই হয়তো তার ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় মুগ্ধ হয়েই তৎকালীন স্থানীয় ও জাতীয় নেতৃত্ব তাকেই বেচে নিয়েছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ।আর তার উপর আস্থার প্রত্যাশিত ফল ও দিয়েছিলেন নাসির।
সহযুদ্ধা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে সাথে নিয়ে সিলেটের উপজেলা, ইউনিয়ন, এমনকি ওয়ার্ড লেভেলে সুসংগঠিত করেছিলেন পিতা মুজিবের নিজ হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগকে। ফলস্বরূপ ছাত্রলীগের রাজনীতির ইতি ঘোষনার পরপরই তিনি যায়গা করে নেন জেলা আওয়ামিলীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক পদে। সুদর্শন চেহারা আর প্রখর মেধাশক্তি, দাম্ভিক গোফ আর মোটা চশমাপরা সেই সময়ের তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা নাসির উদ্দিন খান ১/১১ এর কঠিন সময়ে মাসের পর মাস কারাগারের অন্ধকার সেলে নিষ্ঠুর নির্যাতনের রাজসাক্ষী হয়েও জনক কন্যার প্রশ্নের ছিলেন আপোষহীন। শত প্রলোভন, পরিবার, পরিজন, স্ত্রী, সন্তানের মোহ ত্যাগ করে পিতা মুজিবের প্রদর্শিত পথে অনিশ্চিত কারাজীবন কিংবা ফাঁসির দণ্ডের ভয় তাকে লক্ষ চ্যুত করেনি বলেই জনক কন্যা ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্নভিন্ন করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া পরবর্তী জেলা সম্মেলনে তাকে দায়িত্ব দেন জেলা আওয়ামি লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের।
যেকোনো দায়িত্বই দায়িত্ববানদের মতোই সম্পাদন করেন বলেই নিকট অতীতে অনুষ্ঠিত সিলেটের বহুল আলোচিত চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েই চমকে দেন নাসির উদ্দিন খান। প্রশাসন কিংবা সরকারি কোনো সংস্থার হস্তক্ষেপ ছাড়া যেখানে চেম্বার নির্বাচনের কথা ভাবাই যায়না, সেখানে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর কারিশমাটিক মুন্সিয়ানা দেখিয়ে কোনো প্রকার সহিংসতা ছাড়াই একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেন নাসির উদ্দিন খান। তার প্রজ্ঞা আর সততা আপামর সিলেটের জনগণের কাছে খোলা চিঠির মত। আর তাই বঙ্গবন্ধু অনুসারীদের কাছে ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠেন আস্থার আশ্রয়। যে কেউ তার সাথে কথা বলতে,কিংবা যেকোনো সমস্যা নিয়ে সুপরামর্শ পেতে অন্য কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয়না। কেননা এডভোকেট নাসিরের দরজা রিকশা ওয়ালা থেকে ক্ষমতা ওয়ালা সবার জন্য খোলা। সেখানে অনিয়ম আর দুর্নীতির প্রশ্নে কোনো ছাড় নেই।
আর হয়তো তাই জনক কন্যা আবারও সিলেটের আন্দোলন, সংগ্রামে আর ব্যলটের নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠা নাসির উদ্দিন খান কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সিলেটে তৃনমুল কে পুরস্কার হিসেবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছেন। জীবনযুদ্ধে বিজয়ী জনক কন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত যে শতাংশ সঠিক তা এই জেলার আওতাধীন যেকোনো সাধারণ কর্মীর কাছে জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে। দায়িত্ব নেবার পরপরই অগ্রজদের পরামর্শ নিতে তাদের বাসা বাড়িতে নিরব কর্মী হয়ে বসে থাকা নম্রতার নজির নাসির উদ্দিন খান শত্রু মিত্র জয় করা আমার চোখে মুজিব আদর্শের এক নির্ভীক ফেরিওয়ালা আর হতাশা গ্রস্থ সাধারণ মানুষের কাছে আরেক নাসির উদ্দিন সিপাহসালার।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D