২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৬
তিনি একজন নারী। একজন মুসলিম। একজন আমেরিকান। একজন হিজাব পরিহিতা। ইবতিহাজ মোহাম্মদ নাম। বয়স ৩০ বছর। ইতিহাস গড়েছেন এ মুসলিম নারী। অলিম্পিকের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি গৌরবের। অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মেডেল অর্জন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়রা। কিন্তু এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মুসলিম নারী হিজাব পরে অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করেছেন। রিও অলিম্পিকে এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০০ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে তাদের ফেন্সিং দলের সদ্য ইবতিহাজ মোহাম্মদ। র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তারষ্ট্রের ২ নম্বর ফেন্সার তিনি। আর বিশ্বে অষ্টম। এ মুসলিম নারী এবার হিজাব পরেই অলিম্পিকে খেলবেন। আফ্রিকান বংশোদ্ভুত আমেরিকান এ ফেন্সারকে নিয়ে আলোচনা বেশ আগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম হিজাব পরিহিতা নারী হিসেবে অলিম্পিকে অংশগ্রহণের খবরে অনেকে আগ্রহে কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। ফেন্সিং খেলাটা তলোয়ার নিয়ে কৌশল প্রদর্শনীর মতো। দুইজন খেলোয়াড় এক ধরনের তলোয়াড় দিয়ে লড়াই করেন। এ খেলায় কৌশল অনেক বড়। ইতিমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যালেনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে জানিয়েছেন নিজের প্রবল ইচ্ছা শক্তির কথা। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি মিশেল ওমাবার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে। মিশেল ওবামাকে তিনি ফেন্সিংয়ের বেশ কিছু কৌশল শিখিয়েছেন। মিশেল ওবামাও খুব আগ্রহ নিয়ে তার কাছ থেকে তলোয়ার চালানোর কৌশল শেখেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বহুল প্রচারিত সাময়িকী ‘টাইম’ তাকে বিশ্বের প্রভাব সৃষ্টিকারী ১০০ নারীর তালিকায় রেখে সম্মানিত করেন। তবে সর্বশেষ আলোচনায় আসেন অলিম্পিক শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্র্যাম্প। মুসলিম বিদ্বেষী বিভিন্ন মন্তব্য করে ইতিমধ্যে সমালোচিত তিনি। ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুসলিমদের বের করে দেয়া উচিৎ’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তার এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পর তাকে একটি চিঠি লেখেন ইবতিহাজ মোহাম্মদ। সেখানে অনেক কথধার মধ্যে এটাও লেখেন, ‘যুক্তরষ্ট্রে মুসলিমদের নিষিদ্ধ করলে তারা দেশটে কিভাবে পদক এনে দেবে’। ইবতিহাজ বেড়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। তার পরিবারের প্রায় সবাই ক্রীড়া-পাগল। ভাই খেলেন ফুটবল। তার আরেক বোনও একজন ফেন্সার। ছোটবেলা থেকে তার মধ্যেও খেলার প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। বিভিন্ন খেলার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেন্সিং-ই তার বেশি পছন্দ হয়েছে। ফেন্সিং খেলার সময় খেলোয়াড়দের শরীর অনেকাংশ ঢেকে রাখতে হয়। তার এই খেলা পছন্দের বড় কারণ এটি। মুসলিম নারী হিসেবে তিনি কখনো হিজাব ছাড়তে চাননি। ফেন্সিং খেললে হিজাব পরায় কোনো অসুবিধা হবে না বলে তিনি এই খেলায় ঝুকে পড়েন। আর এক্ষেত্রে তিনি এখন ইতিহাস। হিজাব ঠিক রেখে ফেন্সিং খেলার পরিকল্পনাটা তার মায়ের। ইবতিহাজের মা স্থানীয় একটি স্কুলের পারিচালক। তিনি চাইতেন- তার মেয়ে কোনো স্পোর্টস করুক। কিন্তু মুসলিম মেয়েদের জন্য যে কোনো খেলায় অংশগ্রহণ করা একটু ঝামেলার। ইসলামিক বিশ্বাস ঠিক রেখে কিভাবে কোনো খেলায় অংশগ্রহণ করা যায় সেটা ভাবছিলেন তিনি। ইবতিহাজ ওই সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার মা-ই আমাকে ফেন্সিং খেলার কথা বলেন। তিনি স্থানীয় একটি হাই স্কুল পরিচালনা করেন। তিনি দেখলেন, কিশোর ছেলে এবং মেয়েরা মাথায় হেলমেট, লম্বা প্যান্ট ও ঢিলেঢালা জ্যাকেট পরে ফেন্সিং খেলছে। তিনি এটা পছন্দ করলেন। আমি তখন জানতাম না- আসলে এই খেলাটা কী। কিন্তু মায়ের কথা মতো আমি এই খেলা শিখতে শুরু করলাম।’ ইবতিহাজ যখন ফেন্সিং শুরু করেন তখন তার বয়স ১৩ বছর। এখন তার বয়স ৩০ বছর। কঠোর পরিশ্রম ও ঘাত প্রতিঘাত উপেক্ষা করে এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা ফেন্সার। তিনি শুধু একজন ফেন্সার-ই নন একজনবড় মাপের ফ্যাশন ডিজাইনারও। লস অ্যাঞ্জেলেসের বিখ্যাত এক ডিজাইনিং ব্র্যান্ডের ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D