২৮শে জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২২
অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান :: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বের নামীদামী অভিজ্ঞ ডিফেন্স এনালিস্টগণদের গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ নিয়ে সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশ্ব নিশ্চিত রূপে এক অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে যা ‘অকল্পনীয় এক পরিণীতি ডেকে নিয়ে আসবে’।
তবে কি বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে ওঠছে ? রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এখন আক্ষরিক অর্থেই জটিল সমীকরণে জড়িয়ে গেছে l চাইলেই যুদ্ধরত কোনো পক্ষ পিছিয়ে আসতে পারবে না।পরাশক্তি রাশিয়া যদি কোনো কারণে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ‘রিট্রিট’ করে যা তাদের জন্য অকল্পনীয়, তবে সেটি হবে তাদের জন্য বিস্ময়কর বিপর্যয়।তাই পরিণতি যাই হোক রাশিয়ার পক্ষে কোনোভাবেই এটা মেনে নেওয়া সম্ভৱ হবেনা।
ইউক্রেনের মিত্ররা যেভাবে ইউক্রেনকে লজিস্টিক ও অর্থনৈতিক এবং স্পেশাল ফোর্স এর মাধ্যমে (যা এখন আর গোপন নেই) ফ্রন্টলাইনে সরাসরি সহযোগিতা করছে, তাতে করে ইউক্রেন এর ফাইটিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন। তবে কি রাশিয়া পশ্চিমা শক্তির ‘স্পাইডার ওয়েব’ (মাকড়সার জাল) এ জড়িয়ে যাচ্ছে ? হতে পারে।’কনভেনশনাল ওয়ার’ সকল সময় সামরিক শক্তি ও সমরাস্ত্র এর উপর নির্ভর করে না।ছোট ছোট দেশ বা গোষ্ঠী অনেক সময় বড় সামরিক শক্তির উপর বিজয় লাভের নজির নিকট অতীতে দেখতে পাওয়া যায়।
পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে প্রথম দিকে অতোটা সিরিয়াসলি নেয়নি।আমেরিকান শক্তিশালী ইন্টেলিজেন্স উইং এর রিপোর্ট অনুযায়ী রাশিয়ার সীমিত আগ্রাসন সম্পর্কে যে ধারণা প্রথম দিকে তারা পোষণ করেছিলো, হটাৎ করে তারা তাদের ‘ হাইপোথিসিস’ এর উল্টোটা ঘটতে দেখেও এর ভবিষৎ পরিণীতির সম্ভাব্য বিপর্যয়বোধ থেকে বিচলিত হয়ে পড়ে।তাদের বিচলিত হওয়ার কারণটা অন্য জায়গায়।
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর দনবাস্ক ও রাশিয়ান ভাষাভাষী অন্যন্য করিডোর, যা রাশিয়া তার মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করতে চায়- এটাই তাদের পরিকল্পনা বলে পশ্চিমাদের ধারণা ছিলো। যদি তাই-ই হতো তাহলে বোধ করি পশ্চিমাদের এখনকার মরিয়া মনোভাব এতোদূর বিস্তৃত হতো না । কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, পশ্চিমা বিশ্ব তাদের অর্থনীতির সুদূর প্রসারী ক্ষতি ও প্রভাব তথা সামরিক শ্রেষ্টত্বের প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি অনুভব করছে। ইউক্রেন-এ রাশিয়ার বিজয় এর অর্থ ব্ল্যাক সি ও বাল্টিক দেশগুলোর উপর, এমনকি মধপ্রাচ্যের দেশগুলো রাশিয়ার প্রভাব বলয় এর বৃত্ত থেকে বের হতে পারবেনা বা চাইবেনা।
পশ্চিমা বিশ্বের ইউক্রেন- এ ব্যাপক সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য ক্রমশঃ বিস্তৃত হচ্ছে। রাশিয়াকে ইউক্রেন এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ফিনল্যান্ড , সুইডেনকে ন্যাটোতে শিগগিরই অন্তভুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ন্যাটো ফিনল্যাণ্ড ও সুইডেনে তাদের উপস্থিতির জানান দিয়েছে।
এ দিকে রাশিয়া সামগ্রিক পরিস্থিতির বিবেচনায় আক্রমণ তীব্র থেকে তীব্রতর করে যাছে। রাশিয়া যে কোনো মূল্যে দ্রুত তার অবজেক্টিভ হাসিল করতে চায়। কারণ যুদ্ধরত সকল পক্ষ জানে, প্রলম্বিত যুদ্ধ মানেই অনেক পক্ষের জড়িয়ে পড়া। আর এর পরিণীতি একটি ব্যাপক আন-কনভেনশনাল ওয়ার। তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ না হলেও যা হবে সেটি নিশ্চিত রূপেই মানব সভ্যতার ধ্বংস অনিবার্য করে তুলতে পারে।
লেখক: অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি, দৈনিক শ্যামল সিলেট
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D