রেল সেতুর স্লিপারে বাঁশ

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০১৭

রেল সেতুর স্লিপারে বাঁশ

অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনা সত্য। বিভিন্ন স্থাপনায় রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের খবর প্রকাশ হলেও এবার দেখা গেলো রেল সেতুর স্লিপারে রড বা পাতের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের ফালি।

সিলেট-আখাউড়া রেলপথের কুলাউড়া উপজেলার ২০৬ নং মনু রেলসেতুর কাঠের অর্ধেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। আর নষ্ট হওয়া স্লিপারের সংস্কার কাজে লাগানো হয়েছে বাঁশ।

রেল সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। সেতুটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে পড়েছে। মনু রেলস্টেশনের পাশেই এ সেতুর অবস্থান।

সরেজমিনে দেখা যায়, মনু নদীর ওপর প্রায় ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুতে ২০৮টি স্লিপার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানচ্যুত না হতে ওই নষ্ট স্লিপারের ওপর ফালি করা বাঁশ স্থাপন করে পেরেক ঠুঁকে রাখার কাজ চলছে।

তিনজন কিম্যান (রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী) সেতুর ওপর নাট-বল্টু লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের সঙ্গে নিচের গার্ডারের সংযোগ দেয়ার কাজ করছেন।

কিম্যান আব্দুর রহমান জানান, স্লিপারগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকুনিতে নাট-বল্টু খুলে স্লিপারগুলো সরে যায়। দিনে দু-তিনবার এসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয়। কোথাও ত্রুটি থাকলে সারাতে হয়। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরাও।

কুলাউড়া লোকোশেডের ট্রেনচালক নাজমুল হক জানান, ট্রেন চালানোর সময় রেললাইনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। কোনো কারণে স্লিপার লাইনচ্যুত হয়ে রেল ট্রেক সরে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মনু রেল স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। সেখানে বর্তমানে কোনো ট্রেনের বিরতি হয় না। পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া রেল স্টেশনের মাস্টার হরিপদ সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

তিনি জানান, রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ তদারকি করা তার কাজ নয়। তিনি শুধু স্টেশনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত। তাই মনু রেল ব্রিজের স্লিপার নষ্ট এবং স্লিপারে বাঁশ বা কি লাগানো হয়েছে তা তার জানা নেই।

তিনি বলেন, রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণ এ অঞ্চলে কাজ করে শ্রীমঙ্গল এরিয়ার কিম্যান বিভাগ। এটি তারা বলতে পারবে।

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল