১৩ই আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
মো.নাঈমুল ইসলাম
অবশেষে ৪ দিনের শিশুটি তার মাকে খুঁজে পেল। ধর্মের চাইতে মানবতা বড়। জন্মদাতা পরিবারের চাইতেও বেশি কাঁদছে শিশুটিকে দুধ মায়ের পরিচয় দেয়া পরিবারটি। আর্থিক অনটন আর অভাবের কারণে শিশুটির লালন-পালন করতে পারবেন না বলে মায়ের কাছে রেখে চলে যান বাবা। বিয়ানীবাজার থানার সাগলীর, বানীগ্রাম এলাকার যগুরাম বৈধ্যের ছেলে বিজিত বৈধ্য শিশুটির বাবা। স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অনেকবার খুশি রানীর মা মিলন মালাকার বিষয়টি শেষ করতে চান। কিন্তু শেষ করতে পারেননি। কিন্তু ব্যর্থতার কারণে মাও শিশুটিকে ফেলে দেন।
কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম জানান, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে নবজাতকের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। মুলত বাচ্চাটির বাবা নিখোঁজ আছেন। তাই মা বাচ্চাটিকে ঐ মহিলার হাতে তুলে দেয়। তবে এখন তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং বাচ্চাটিকে তাদের কাছে নিয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে ৪ দিন বয়সের একটি শিশু যার লালন-পালন হচ্ছে অন্যের ঘরে। শিশুটি ভূমিষ্ট হয়ে পৃথিবীর আলো-বাতাস সবকিছুই দেখলো কিন্তু কে তার জন্মদাতা তাদেরকে দেখা হলো না শিশুটির। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সিলেট নগরীর ৬নং ওয়ার্ডের বাদামবাগিচা এলাকায়। গত মঙ্গলবার একজন বয়স্ক নারী একটি শিশুকে বিক্রির চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে।
বয়স্ক ওই নারী বিক্রির চেষ্টা করলে যে মহিলার কাছে নিয়ে যান তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমকে জানান। বয়স্ক মহিলাকে শিশুসহ নিয়ে যাওয়া হয় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে সেখানে ওই নারীকে আটক করা হয় এবং শিশুটির দুধ মায়ের দায়িত্ব নেন স্থানীয় বাসিন্দা খাদিজা।
কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম জানান, মঙ্গলবার রাতে দুই-তিন দিনের এক বাচ্চাকে নিয়ে বাদামবাগিচা এলাকায় আসেন এক বয়স্ক নারী। এসময় ওই নারী নবজাতকটি বিক্রির চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন তাকে আটক করেন। পরে শিশুটিকে এলাকার এক নারীর হেফাজতে রাখা হয় এবং ওই নারীকে অপর আরেক পরিবারের কাছে আটকে রাখা হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। কিন্তু পুলিশ না আসায় নবজাতক ও নারীকে এলাকার লোকজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে বলে জানান কাউন্সিলর শামীম।
আটক নারীর কাছে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম লেখা ছিল মোছা. সুফিয়া। তিনি সিলেট নগরীর রায়হোসেন আবাসিক এলাকার মৃত বশির আলীর স্ত্রী বলে পরিচয়পত্রে উল্লেখ করা। তবে ওই নারী তার বাড়ি হবিগঞ্জ বলে জানিয়েছেন।
কাউন্সিলর শামীম আরো জানান, ওই নারী তাকে জানিয়েছেন গোলাপগঞ্জের একটি হাসপাতাল থেকে সে শিশুটি এনেছে। হাসপাতাল থেকে কে বা কারা শিশুটিকে ফেলে দেওয়ার সময় সে নিয়ে এসেছে বলে দাবি করছে। তবে আটক নারীর কথাবার্তা অসংলগ্ন বলে জানান শামীম।
নবজাতক শিশুটিকে যখন পাওয়া যায় ঘটনাটি সবার দৃষ্টিগোচরে নিয়ে আসার জন্য এবং প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক দৈনিক সিলেটের দিনকাল’র আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিল নিউজ বিডি’তে লাইভ করা হয়। যা মুহুর্তের মধ্যে সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়। শুরু হয় ফোন কল আসা। সিলেট সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই, সৌদিআরব আরো অনেক দেশ থেকে ফোন আসে। অনেকে বলেছেন শিশুটির যদি বাবা-মাকে খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে তারা দত্তক নিতে চান। তবে মানবিকতার উজ্জ¦ল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শিশুটির দুধ মা খাদেজা।
তার সাথে কথা হলে তিনি সিলেটের দিনকালকে বলেন, আমার নিজের একটি সন্তান রয়েছে। এখনো সে বুকের দুধ পান করছে। আমি ওই শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতো দেখছি। তাকে দুধ মায়ের পরিচয় দিয়েছি। আমার স্বামী বলেছিলেন শিশুটিকে ফেলে দিতে কিন্তু আমি না করেছি। যদি তার আসল বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়া না যায় তাহলে আমি ও আমার স্বামী তাকে মা-বাবার পরিচয় দিয়েই লালন-পালন করবো। নিজ সন্তানের মতো আমাদের আদর, ¯েœহে তাকে লালন-পালন করবো।
বয়স্ক যেই মহিলা শিশুটিকে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন তার সম্পর্কে আরো তথ্য বেরিয়ে আসে বিদেশ থেকে আসা ফোন কলের মাধ্যমে। প্রবাসী একজন ভাই জানান, মহিলাটি আমার কাছ থেকেও একবার বিরাট অঙ্কের টাকা নিয়ে যায়। তাকে অনেক খুঁজাখুঁজির পরও পাইনি। মহিলাটির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D