শুক্রবার জুম্মার নামাজে ইশতেমা মাঠে হাজার হাজার মুসল্লীর সমাগম

প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬

শুক্রবার জুম্মার নামাজে ইশতেমা মাঠে হাজার হাজার মুসল্লীর সমাগম

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটে ইশতেমা শুরু প্রায় ৫ দিন পূর্বে আজ (২৩ ডিসেম্বর) শুক্রবার ইশতেমা মাঠে জুম্মার নামাজে শরিক হন হাজার হাজার মুসল্লী। সিলেটের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে আসেন মুসল্লীরা। আশেপাশের প্রায় ১০/১৫ কি. দূর থেকে পায়ে হেটে আসেন জুম্মার নামাজের শরিক হতে। ২ চোখে সিমানা দেখা যায় নি বলে চলে মুসল্লীদের সমাগম। কয়েক হাজার মোটর সাইকেল আসে ইশতেমা মাঠে। জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী থেকে শুরু করে সাংভাদিক সুশীল সমাজের সর্বস্থরের মানুষ সমবেত হন সিলেটের আজকের সর্ববৃহত্তর জুম্মার নামাজে। সৃষ্ঠি হয় চরম জানজট। প্রায় ২ ঘন্টা পরে জানজট মুক্ত হয় এই এলাকা।

প্রতিবছর গাজীপুরে বিশ্ব ইজতেমা হয়ে থাকলেও এবার সিলেটেরও আয়োজন করা হয়েছে ইজতেমার। আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত হবে তাবলিগ জামাতের এই বৃহৎ আয়োজন।
ইজতেমার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের সিলেট-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন লতিপুর-খিদিরপুর এলাকার মাঠ। বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রতিটি মসজিদে তাবলীগ জামাতের সাথীরা ইজতেমার দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন চলছে শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি।

গত বুধবার  (২১ ডিসেম্বর) ইজতেমা মাঠে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা ইজতেমার মাঠে সাড়ে ৯ লক্ষ বর্গ ফিট পেণ্ডেল নির্মাণসহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাজের সুবিধার্থে মাঠ পরিচর্যা, প্যাণ্ডেল নির্মাণ, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সহ কয়েক বিভাগে বিভক্ত হয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। ইজতেমা আগত বিদেশী অতিথিদের থাকার জন্য ৩টি পৃথক শেড নির্মাণসহ ইতিমধ্যে ইজতেমা মাঠে ১০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ওজু ও গোসলের জন্য ১২টি হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সর্বরাহের জন্য ২ টি অস্থায়ী ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। পয়নিষ্কাসনের জন্য বসানো হয়েছে ১৮০০টি অস্থায়ী লেট্রিন।

ইজতেমার আয়োজকরা জানান, নারীদের জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ইজতেমায় মহিলাদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না। তবে নারীদের জন্য দোয়ার দিন অতিরিক্ত কিছু মাইক লাগানো হবে। প্রতিদিন মুরব্বিদের সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে ইজতেমার বয়ান চলবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আয়োজকদের একজন গোপশহর মসজিদের সেক্রেটারী শামীম আহমদ জানান, ইতিমধ্যে ইজতেমা মাঠের ৮৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকী কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইজতেমা উপলক্ষে স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইজতেমা মাঠসহ আশেপাশের এলাকায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। মাঠে বেশ কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপত্তায় পুলিশ ক্যাম্প ও সাব কন্টোল রুম থাকবে। এছাড়াও ইজতেমায় যাতায়াতের সড়কগুলোতে বাড়তি পুলিশ থাকবে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সিলেটে ১৯৬৫ ও ১৯৮৪ সালে সুরমা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন টেকনিক্যাল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইজতেমা। টংগীতে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামায় দুইবারে বিশ্ব ইজতেমা পালনের আয়োজন করা হলেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিভাগ ভিত্তিক ইজতেমার আয়োজন করার নির্দেশ দেন তাবলীগ জামাতের প্রবীণ মুরব্বীরা। সে অনুযায়ী সিলেটে আবারো ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের অন্যান্য বিভাগে পর্যায়ক্রমে ইজতেমার আয়োজন করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল