সিলেট ৫ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০১৬
আদালত ও পুলিশের চোখে পলাতক হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আমানুর রহমান রানা সংসদের হাজিরা খাতায় সই করেছেন। তবে সংসদের বৈঠকে যোগ দেননি।
সোমবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে দিয়েই সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন এই সাংসদ। সরকারি দলের এই সাংসদ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে হত্যা মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আমানুর রহমান খান সদস্যপদ বাঁচাতে এর আগেও গত বছরের ৫ জুলাই সংসদের হাজিরা খাতায় চুপিসারে সই করে চলে যান।
তবে সংসদে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কেউই সোমবার সাংসদ রানাকে দেখেছেন বলে স্বীকারই করছেন না। সংসদের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস) কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম ও ডেপুটি সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস (অপারেশন) সেলিম খান এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
সংসদ সচিবালয়ের নোটিশ শাখা সূত্র নিশ্চিত করেছে, সোমবার অধিবেশন কক্ষের চার নম্বর লবিতে রাখা হাজিরা বইয়ে সই করেন সাংসদ রানা। এরপর সংসদের বৈঠকে যোগ না দিয়েই কয়েক মিনিটের মধ্যে লবি ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। তবে সংসদ ভবনে তিনি প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করেন।
গত ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আমিনুল ইসলাম সাংসদ রানার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তার আগে ১৬ মে আদালত তার মালামাল বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। গত বছরের ৫ জুলাই থেকে সংসদের বৈঠকে টানা ৭৩ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর সোমবার তিনি সংসদে হাজিরা দেন।
সংবিধান অনুযায়ী, স্পিকারের অনুমতি ছাড়া কোনো সাংসদ টানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। আর সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী, সংসদ এলাকায় কোনো সদস্যকে গ্রেফতার করতে স্পিকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এমপি রানা সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন। নিজস্ব জিপ গাড়িতে চড়েই তিনি সংসদে আসেন। এরপর সাংসদদের জন্য নির্ধারিত লবিতে রাখা হাজিরা খাতায় সই করে তিনি বেলা আড়াইটার দিকে সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে যান।
এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া সমকালকে জানান, সোমবার ১২টা ২০ মিনিটে তিনি সংসদের বৈঠকে স্পিকারের আসনে বসেন। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিনই সংসদ পরিচালনা করছিলেন। তিনি (সাংসদ রানা) সংসদের বৈঠকে ঢুকলে হয়তো তাদের চোখে পড়ার সুযোগ ছিল।
তবে আদালত ও পুলিশের চোখে পলাতক একজন সাংসদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আইনগত সুযোগ রয়েছে কি-না জানতে চাইলে, তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেত রাজি হননি।
সংসদে সরকারদলীয় চিফ হুইপ আসম ফিরোজ বলেন, ‘আমানুর রহমানের সংসদে এসে হাজিরা দেওয়ার বিষয়টি জানতাম না। মঙ্গলবারই ঘটনাটি শুনেছি।’ তবে অধিবেশনে যোগ না দেওয়ায় সাংসদ আমানুরকে তার চোখে পড়েনি বলে তিনি জানান।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুককে। হত্যার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে নাহার দাবি করেন, ফারুক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। তাকে ওই পদের প্রার্থী হতে সরিয়ে দিতেই হত্যা করা হয়। টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই রানা, মুক্তি, কাঁকন ও বাপ্পা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
ফারুক হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার খান পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানাদের চার ভাইকে জড়িত থাকার কথা জানান।
গত ৩ ফেব্রয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মাহফীজুর রহমানের দেওয়া অভিযোগপত্রে রানাসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।
রানা ও তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি এই মামলায় আগাম জামিন নিতে উচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন। আসামিদের মধ্যে রানার অন্য দুই ভাই টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাঁকন ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা ইতোমধ্যেই হুলিয়া মাথায় নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd