সাত খুনের ঘটনা ঘটলেও র‌্যাবের সুনাম ক্ষুন্ন হয়নি

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০১৭

সাত খুনের ঘটনা ঘটলেও র‌্যাবের সুনাম ক্ষুন্ন হয়নি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ‘র‌্যাব একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন, মাদক নির্মূল এসব কাজে র‌্যাবের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। র‌্যাব একটি প্রশংসিত বাহিনী। র‌্যাবের উচ্ছাভিলাষী কয়েকজন কর্মকর্তার কারণে এ সাত খুনের ঘটনা ঘটলেও র‌্যাবের সুনাম ক্ষুন্ন হয়নি।’

রবিবার ৭ খুন মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। গত ১৬ জানুয়ারি সাত খুন মামলার রায় দেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

বিচারক র‌্যাবকে তিরস্কার করেছেন উল্লেখ করে ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, ‘তিরস্কার মানে ভবিষ্যতে যাতে এ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। বিচারক এটাকেই তিরস্কার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিচারক পর্যবেক্ষণে আরও বলেছেন, নূর হোসেনের টার্গেট ছিল নজরুল ইসলাম। দুজনেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেন। দুজনেই সন্ত্রাসী ছিলেন, দুজনের ছিল বিশাল বাহিনী। তাদের দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রাণ হারাতে হয়েছে নিরীহ ছয় জনকে।’

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, ‘মামলার জুডিশিয়াল রেকর্ড, রায় ও ডকুমেন্ট হাইকোর্টে পাঠানো হবে। ডেথ রেফারেন্সে এই মামলার শুনানি হবে। আমরা আশা করবো নিম্ন আদালতের রায় হাইকোর্টেও বহাল থাকবে।’

তিনি জানান, সাত খুনের দুটি মামলার রায় ১৬৩ পাতা করে। প্রতি মামলায় ১১ হাজার করে লাইন। মোট ২২ হাজার লাইন। ইংরেজিতে রায় দেওয়া হয়েছে।

গত ১৬ জানুয়ারি আলোচিত সাত খুন মামলার আসামি নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক উপ অধিনায়ক মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও সাবেক ক্যাম্প ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) এম এম রানাসহ ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। এর ৩ দিনপর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়জনের লাশ। পরদিন আরও একজনের লাশ ভেসে ওঠে নদীতে। নজরুল ইসলাম ও চন্দন সরকার ছাড়া বাকিরা নিহতরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। এরপর স্বজনরা লাশগুলো শনাক্ত করেন।

লাশ উদ্ধারের এক দিন পর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। ১১ মে, একই থানায় আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলা দু’টি একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল