সিলেটে ইজতেমায় লাখো মুসল্লির সমাবেশ, অংশ নিয়েছেন বিদেশীরাও

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬

সিলেটে ইজতেমায় লাখো মুসল্লির সমাবেশ, অংশ নিয়েছেন বিদেশীরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন জেলা ইজতেমা। বৃহস্পতিবার ভোরে (বাদ ফজর) আম বয়ানের মধ্যদিয়ে ৩ দিন ব্যাপি ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে দেশ বিদেশের প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। ইজতেমা অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি’র সমন্বয়ে নেয়া হয়েছে ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গাজীপুরের টংগীতে বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের ঢল নামায়, দু’দফায় বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের করেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় জেলা ভিত্তিক ইজতেমার অংশ হিসেবে সিলেটে ইজতেমা আয়োজন করা হয়েছে।

মুসল্লিরা জানান, আম বয়ানের পর আলাদা আলাদা খিত্তায় আমির নিয়োগ করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকটি খিত্তায় অংশ নেয়া মুসল্লিদের ইমান ও আমলের উপর বয়ান করবেন। শিক্ষা দান চলবে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে। নিজেকে একজন খাটি ইমানদার ও একজন মুসলমান হিসাবে গড়ে তুলে ইসলামের রাস্তায় কাজ করার জন্য তৈরী করতে এই ইজতেমা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন অংশ নেয়া মুসল্লিরা।

সাড়ে ৯ লাখ বর্গ ফুট জুড়ে সামিয়ানা টানানো হলেও মুসল্লিদের সংখ্যাবাড়ায় বাড়ানো হয়েছে জায়গা। ওজু , গোসল , পয়নিষ্কাসনের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। রয়েছে মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প।

ইজতেমায় স্বেচ্চাসেবক হিসাবে নিয়োজিত মুসল্লি রাজ জানান, প্রথমে ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা ছিল। পরে আরো ২ লাখ মুসল্লির জায়গা বাড়ানো হয়েছে। তিনি জানান, স্থানীয়রা ইজতেমা সফল করতে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে স্বেচ্চায় কাজ করছেন।

বিশ্ব ইজতেমার মতো সিলেট জেলা ইজতেমায়ও উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক বিদেশী মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তার রক্ষায় কাজ করছে র্যা ব, পুলিশ, বিজিবি সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবির আলাদা আলাদা ক্যাম্প খুলা হয়েছে। কয়েকটি ওয়াচ টা্ওয়ার থেকে পুরো ইজতেমা ময়দা পর্যবেক্ষনে রেখেছে আইন শৃংখলা বাহিনী।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া  জানান, ইজতেমায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিদেশিরা অংশগ্রহণ করেছে। বিদেশিদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ইজতেমার নিরাপত্তায় ৫ স্থরে একহাজার আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ইজতেমা সিলেট জেলা পর্বের আমির মাওলানা সুয়েজ আফজাল খান বলেন, দ্বীনের রাস্তায় মুসল্লিরা দেশ বিদেশ থেকে এসেছেন। আমরা নিজের সাধ্যমত সকল মেহমানের খেদমত করার সর্বোচ্ছ চেষ্ঠা চালাচ্ছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের ইমান ও আমল চর্চায় এই তিনদিন মুসল্লিরা এখানে অবস্থান করবেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান সহ বিভিন্ন দেশের বক্তারা এই তিন দিন বয়ান পেশ করবেন।

দেশি বিদেশি তাবলিগের মুরব্বিগন এই তিন দিন ইমান ও আমলের ওপর  বিশেষ বয়ান পেশ করবেন। ৩১ ডিসেম্বর আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এই ইজতেমা।

উল্লেখ্য সিলেটে ১৯৬৫ ও ১৯৮৪ সালে সুরমা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন টেকনিক্যাল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইজতেমা। টংগীতে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামায় দুইবারে বিশ্ব ইজতেমা পালনের আয়োজন করা হলেও স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিভাগ ভিত্তিক ইজতেমার আয়োজন করার নির্দেশ দেন তাবলীগ জামাতের প্রবীণ মুরব্বীরা। সে অনুযায়ী সিলেটে আবারো ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের অন্যান্য বিভাগে পর্যায়ক্রমে ইজতেমার আয়োজন করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল