সিলেটে শিক্ষা অধিদপ্তরে তোলপাড়

প্রকাশিত: ২:১৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬

সিলেটে শিক্ষা অধিদপ্তরে তোলপাড়

কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সিলেট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা তড়িঘড়ি করে এ কাজটি করছেন। ৭০ কোটি টাকার কাজের মধ্যে আংশিক টাকা উত্তোলন করার পর বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে হৈ-চৈ শুরু হয়েছে। তবে, সিলেট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন একটি মহল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটাচ্ছে। সিলেট বিভাগের ৪২টি কলেজের অবকাঠামো নির্মানে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পৃথক টেন্ডারে প্রায় ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২০১৫ সালের নভেম্বরে ১১টি কলেজের প্রত্যেকটিতে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা করে ভবন নির্মাণে প্রায় ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। কলেজগুলো হচ্ছে, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ডিগ্রি কলেজ, একই জেলার বাদাঘাট কলেজ, সৈয়দপুর আদর্শ কলেজ, গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক স্মৃতি কলেজ, বড়খাল বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সমুজ আলী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেটের গোয়ালাবাজার আদর্শ মহিলা কলেজ, দয়ামীর কলেজ, ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, কানাইঘাট ডিগ্রি কলেজ ও নূরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ। প্রকল্পের কাজ ১৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও এ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত কোনো কলেজে কাজ শুরু করা হয়নি। কাজ না করিয়েই এর আগে গত অর্থবছরের জুন মাসেই ৩০-৪০ ভাগ কাজের বিল তুলে নেয়া হয়েছে। চলমান ডিসেম্বর মাসে দু’-একটি কলেজে নামে মাত্র কাজ শুরু হলেও অধিকাংশ কলেজে এখনও কাজ শুরুই হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানেনই না কবে থেকে কাজ শুরু করা হবে। গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক স্মৃতি কলেজের হেডক্লার্ক আবদুশ শহীদ জানিয়েছেন, টাকা বরাদ্দ হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে কাজ কবে থেকে শুরু হবে তা আমাদের জানা নেই। বড়খাল বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপ্যাল নজির আহমদ জানান, টাকা বরাদ্দের সংবাদ পেলেও কাজ শুরু হচ্ছে না। দক্ষিণ সুরমার নূরজাহান মেমোরিয়েল মহিলা কলেজের প্রিন্সিপ্যাল নিজাম উদ্দিন তরফদার জানিয়েছেন, বরাদ্দ দেয়া হলেও তার কলেজে এখনও ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হচ্ছে না। চলতি ডিসেম্বরে ধর্মপাশা ডিগ্রি কলেজসহ কয়েকটি কলেজে সবেমাত্র কাজ শুরু হয়েছে এবং কাজ শেষ হতে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদাররা। এদিকে ওই ১১ কলেজের কাজ সম্পন্ন না করেই এ বছরের ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে আরো ৩১ টি কলেজে ৫৫ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ওই ৩১টি কলেজে ঠিকাদাররা ১৮ থেকে ১৯ ভাগ নিম্নদরে দরপত্র দাখিল করে কিন্তু প্রভাবশালী ঠিকাদারদেরকে ডেকে নামেমাত্র ৩-৫ ভাগ নিম্নদরে কাজগুলো দেয়ায় সরকারের প্রায় ৫ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রকল্পগুলোর কাজ ১৮-২০ ভাগ নিম্নদরে দেয়ার সুযোগ থাকলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ৩-৫ ভাগ নিম্ন্নদরে ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। আর এভাবেই অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেট-এর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কমকর্তা-ব্যক্তিরা অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে ঠিকাদারদের একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ওই ঠিকাদাররা বলেন, যাদের দিয়ে টাকা লুটপাট করা যাবে সেইসব ঠিকাদারদের এসব প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। তবে অভিযোগের ব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেট-এর নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে উন্নয়ন কাজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

সূত্র: মানব জমিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল