হামলা-মামলা ও গ্রেফতার অতঙ্কের মধ্যে দিয়ে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা….!

প্রকাশিত: ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬

হামলা-মামলা ও গ্রেফতার অতঙ্কের মধ্যে দিয়ে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা….!

Sylhet City BNP৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বুধবার: প্রায় সাত মাস আগে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচিতরা ‘ভোটের নেতৃত্ব’ হিসেবে পরিচিতি পান। এই নেতৃত্বের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ১৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নগরবাসীকে উপহার দেবেন বলে অপেক্ষা নগরবাসী।
পুলিশি হয়রানি, গ্রেফতার আতঙ্ক ও মামলা-মোকদ্দমার আশঙ্কায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে চলছে সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম। এমনকি কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও পালন করতে হতে হয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বাধা সম্মুখিন।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল পর্যায়ের দুজন দায়িত্বশীল নেতা। তাঁরা বলেন, সাত মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা হতাশ। অনেকে নিস্ক্রিয় ও হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দল চলছে অগোছালো ভাবে। ফলে কেন্দ্র থেকে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও কর্মীদের উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়ে না। এর বাইরে গ্রেফতার আতঙ্ক আর হয়রানির ভয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলছে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দিন কারাবরণ করেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ১১টি মামলা। তিনি ছেলে চিকিৎসার কাজে স্থানান্তরিত ছিলেন। দায়িত্বশীল এই নেতার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশ সৃষ্টি হয়। সরকারি জুলুম-নির্যাতনের ভয়ে বিএনপির কর্মীরা প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারলেও আড়ালে ঠিকই দলকে সংগঠিত করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগরের চারটি ওয়ার্ডের প্রথম সারির অন্তত ছয়জন নেতা বলেছেন, পুলিশি হয়রানি আর গ্রেফতার আতঙ্কে দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন না। সারাক্ষণ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি থাকায় কেউই চাপমুক্ত হয়ে রাজনীতি করতে পারছেন না। আপাতত বিএনপির কর্মীরা চুপসে থাকলেও সঠিক সময়ে ঠিকই ভূমিকা রাখবেন বলে তাঁরা প্রত্যাশা করছেন।
নতুন কমিটি ঘোষণা হলেই স্থবিরতা কেটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনা হয়েছিল। সংশোধিত গঠনতন্ত্রের কপি প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটে পাঠানোর কথা ছিল। সেটি না আসায় আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি এত দিনেও গঠন করতে পারিনি। তবে কেন্দ্রের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। গঠনতন্ত্রের সংশোধিত কপি আমাদের কাছে পৌঁছালেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বরুজ্জামান সেলিম বলেন, নেতা কর্মীদের উপর মিথ্যা হামলা ষড়যন্ত্র মূলক মামলা দিয়ে অবৈধ সরকার হয়রানি করছে। দেশে চলছে ক্ষমতাসীনদের লুটপাট। এসকল প্রতিকুলতার মধ্যে আগামী পবিত্র ঈদুল আযহার আমেজের মধ্যে দিয়ে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে অধিকাংশ সময় আদালতের বারান্দায় কাটাতে হয়। সাংগঠনিক ভাবে দল একটু তৎপর হলেই পুলিশ হয়রানির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পুলিশ তাঁদের প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেয় না। এতে করে দল চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

গত ৭ ফেব্র“য়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে সিলেটে তৃণমূলের নেতাদের প্রত্যক্ষ ভোটে মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বদরুজ্জামান সেলিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মিফতাহ সিদ্দিকী নির্বাচিত হন। তাঁরা নির্বাচিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক বক্তৃতায় দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নিবেদিত প্রাণ নেতাদের নিয়ে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল