২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০১৬
মৃৎশিল্প বাঙালী ও বাংলার ঐতিহ্যের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের লোকজ কর্মকাজে মৃৎশিল্পের অবস্থান ও মৃৎশিল্পের শিল্পীদের অবদান অ¯^ীকার করার মতো নয়। মাটি দিয়ে তৈরী নানারকম বাহারী তৈজসপত্র ও শখীন সামগ্রী বাঙালীর নান্দনিক জীবন ও সংস্কৃতিকে করেছে বিকাশিত ও উজ্জ্বিবিত। মৃৎশিল্পিরা মাটির সাথে তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরী করেন বিভিন্ন মূর্তি, হাঁড়ি, চুনপাত্র, ফুলদানী, সরাই, দুধের হাঁড়ি, মালসা, বদনা, থালা, কলসি, পানের বাটা, মটকা, কাজলা বাটি সহ অসংখ্য রকমের বাহারী তৈজসপত্র।
মাটি দিয়ে যারা দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদেরকে বলা হয় কুমার। আর কুমাররা মাটি দিয়ে মাটি দিয়ে যে জিনিস পত্র তৈরী কওে তাকে বলা হয় মৃৎশিল্প। তদরুপ, শতবছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প তৈরী করতে কয়েকটি কুমার পরিবার সংঘবদ্ধ হয়ে যেখানে বসবাস করে তাকে বলা হয় কুমারপাড়া।
প্রযুক্তির বিকাশ, টেকসই সামগ্রী ও আধুনিকতার চাপাকলে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যেও মৃৎশিল্প। লোহা, স্টিল ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র মাটির চাইতে টেকসই হওয়ায় মাটির তৈরী জিনিসের কদর অনেকাংশে কমে গেছে। বর্তমানে মানুষ শুধুই শখের বসে মাটির তৈরী বিভিন্ন পন্য সৌন্দর্য বর্ধনে সাজিয়ে রাখে। ফলে মৃৎশিল্পের আসিত্ত্বও ক্রমে ক্রমে বিলুপ্তির পথে। মৃৎশিল্পের এই অবস্থাতে ক্ষুদ্র হয়েছে মৃৎশিল্পের বাজার। তবে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ শিশু একাডেমী এলাকার মৃৎশিল্পের বাজার অতি পরিচিত নাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের অপর পাশে গড়ে উঠেছে এসব মৃৎশিল্পের দোকান।তাছাড়া ধানমন্ডির রাজারবাজার, সাভারের পর্যটন সহ বিভিন্ন এলাকায় মৃৎশিল্পের দোকান দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন মেলায় কুমারদের কাছ থেকে মৃৎশিল্প সামগ্রী এনে বিক্রি করতে ক্রেতাদেও চাহিদা অনুযায়ি সাজিয়ে বসেন। মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছাড়াও ম্যাট, ব্যাগ, দোলনা, ছিকা, প্লাস্টিক ও কাগজের ফুল হরেক রকমের বাহারি পন্যও শোভা পায় এসব দোকানে। আর এসব দোকানে ভিড় জমায় নগরীর বিভিন্ন এলাকার রুচিশীল মানুষেরা এবং তারা নিজেদেও পছন্দ মত সামগ্রী ক্রয় করেন।
ঢাকার দোয়েল চত্বর এলাকার সায়েদুল হক নামক এক মৃৎশিল্প দোকানদার বলেন-‘দৈনিক যত মানুষ কিনতে আসে তাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই শখ করে আসে। আগের মতো এখন কেউই মাটির তৈজসপত্র নিত্য ব্যবহার করে না।’ নিশাত আরোরা তাসনীম নামের এক ক্রেতাকে জিজ্ঞেস কওে জানা যায়- তিনি তার বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে এখানে এসেছেন।
মেলামাইন, অ্যালমুনিয়াম, ষ্টীল, সিরামিক, প্লাস্টিক প্রভৃতি আধুনিক ও উন্নত শিল্পের সঙ্গে টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছে কুমারদের। অ্ধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব ও কাঁচামালের উচ্চ মূল্যেও কারনে কুমাররা সেভাবে এগিয়ে যেতে পারছেনা। মৃৎশিল্পের জন্য নেই সরকারি ও বেসরকারি ঋন ও পৃষ্ঠপোষকতা। তাছাড়া মাটির পন্যের চাহিদা খুব একটা না থাকায় দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন কুমাররা। তাই ঐতিহ্যের এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কুমারদেও সহজ শর্তে ঋন দেওয়া ও তাদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন মাটির তৈজসপত্র তৈরীতে সহায়তা করা প্রয়োজন। এতে মৃৎশিল্প দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা সম্ভব। তাহলে আমরা আবার ফিওে পেতে পারি আমাদেও শতবছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D