১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০১৭
ক্রীড়া প্রতিবেদক: ব্যাটসম্যানরা চ্যালেঞ্জিং পুঁজি এনে দিতে পারেননি। পরে বোলাররা লড়াই জমিয়ে তোলার আভাস দিয়েও ধরে রাখতে পারলেন না। ফলাফল, নতুন বছরেও ভাগ্য বদলালো না মাশরাফি বিন মুর্তজাদের। নেপিয়ারে টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৪২ রানের চ্যালেঞ্জ তাড়া করতে নেমে তাই খুব বেগ পেতে হলো না নিউজিল্যান্ডকে। মঙ্গলবার ৬ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টির সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল কিউইরা।
ম্যাকলিন পার্কে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৫২ রানে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে কেন উলিয়ামসনের অপরাজিত ৭৩ রানে রানে ১২ বল হাতে রেখেই জয়ে নোঙর ফেলে নিউজিল্যান্ড।
রান তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী থেকেই নেইল ব্রুমকে নিয়ে আক্রমণাত্মক ছিলেন উলিয়ামসন। বাংলাদেশের বোলাররাও পাল্টা আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কিউই অধিনায়কের ব্যাটে চাপ কাটিয়ে জয়ের পথে হাঁটতে সমস্যা হয়নি স্বাগতিকদের।
কলিন গ্র্যান্ডহোমের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন উইলিয়ামসন। ম্যাচ সেরা ৭৩ রানের ইনিংসটি খেলেছেন ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫৫ বলে। সঙ্গী গ্র্যান্ডহোমে ৩টি করে চার-ছয়ে অপরাজিত ছিলেন ৩৫ বলে ৪১ রানে।
শুরুতে অবশ্য এতটা বিবর্ণ ছিল না টাইগারদের বোলিং। উইলিয়ামসনের সঙ্গে উদ্বোধনীতে ২২ রান যোগ করা ব্রুমকে ফিরিয়ে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ২০১৪ এর আগস্টের পর আবারো টি-টুয়েন্টি খেলতে নামা রুবেল। এই পেসার একাদশে ফিরেই সফলতা পেয়েছেন। অবশ্য তাতে সমান অবদান থাকল সাকিবেরও। ক্যাচ ধরে বল সমেত বাউন্ডারির বাইরে ছিটকে যেতে বসেছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। পরে বল বাতাসে ঠেলে দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে থেকে ফিরে এসে দুর্দান্ত ক্ষীপ্রতায় লুফে নেন তিনি। তাতেই আউট ব্রুম।
পরের ওভারেই আঘাত হানের মুস্তাফিজ। রানের খাতা খোলার আগেই কলিন মুনরোকে উইকেটরক্ষক নুরুলের ক্যাচ বানান কাটার মাস্টার। আর উইকেটে জেঁকে বসার আগেই কোরি অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়েছেন সাকিব। ১৪ বলে ১৩ রান করা কিউই অলরাউন্ডারকে তামিমের ক্যাচ বানিয়েছেন টাইগার অলরাউন্ডার।
অভিষিক্ত টম ব্রুস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারতেন। কিন্তু রান আউটে ৭-এর ঘরেই তাকে থামিয়েছেন মাশরাফি। সেখান থেকেই পাল্টা প্রতিরোধ উইলিয়ামসন ও গ্র্যান্ডহোমের। তাতেই তাসমানিয়া সাগরে সলীল সমাধি বাংলাদেশের স্বপ্নের।
বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন সাকিব, রুবেল, মুস্তাফিজ। কিন্তু মাঝারি সংগ্রহের দিনে সেটা যথেষ্ট ছিল না।
এর আগে নতুন বছরে নতুন প্রত্যয়ে মাঠে নেমে উইকেট ছুঁড়ে আসার পুরোনো অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ে নেমে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পরও অবশ্য লড়াইয়ের মত সংগ্রহই গড়েছিল টাইগাররা। সেটা হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রুখে দাঁড়ানোয়।
শুরুতেই নিয়মিত উইকেট হারানোর ম্যাচে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে এগিয়ে নেয় মিডলঅর্ডার। তাতে মাহমুদউল্লাহ ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটিও পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত রানের গতির নেশাতেই থেমেছেন। ফার্গুসনের বলে স্টাম্প ভেঙেছে মাহমুদউল্লাহর। ফেরার আগে ৩টি করে চার ছয়ে ৪৭ বলে ৫২ রানের ঝলমলে একটি ইনিংস সাজিয়েছেন এই টাইগার ভরসা।
এদিন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথ ধরেছেন ইমরুল কায়েস। ২ বল খেলে ম্যাট হেনরির অফস্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে লুক রনকিকে ক্যাচ দিয়েছেন এই বাঁহাতি।
পরে সাব্বির রহমানকে নিয়ে দেখেশুনেই এগোচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে অভিষিক্ত বেন হুইলারকে দারুণ একটি চার মেরে হাত খোলার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বলেই হুক করে উড়িয়ে মারতে যেয়ে বাউন্ডারির কাছে আরেক অভিষিক্ত টম ব্রুসকে ক্যাচ দিয়েছেন। ফেরার আগে ১২ বলে ১১ এসেছে তামিমের ব্যাট থেকে।
অভিষিক্ত লোকি ফার্গুসেনের ওভারে সফরকারীদের আরো বড় ধাক্কা আসে এরপরই। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে সাব্বির রহমান ও সৌম্য সরকারকে ফেরান ২৫ বর্ষী এই পেসার। প্রথমে সাব্বিরকে ফুলটস বলে মিড উইকেটে হেনরির ক্যাচ বানান লোকি। ১টি করে চার-ছয়ে ১৫ বলে ১৬ রান করেছেন সাব্বির। পরের বলে দুঃসময়ে থাকা সৌম্যর বাজে ফর্ম দীর্ঘায়িত করেছেন কোরি অ্যান্ডারসনের ক্যাচ বানিয়ে। এদিন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই গালিতে ক্যাচ দিয়ে ‘গোল্ডেন ডাকের’ স্বাদ পেয়েছেন সৌম্য।
টাইগাররা ৩০ রানে হারিয়েছিল ৪ উইকেটে। বিপদ! সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে এগোচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। দলীয় সংগ্রহটা পৌঁছে গিয়েছিল ৬৭ রানে। এরপরই রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বিপদ বাড়িয়েছেন সাকিবও। চার-ছয় বিহীন এক ইনিংসে ১৪ বলে ১৪ রান এসেছে এই অলরাউন্ডারের ব্যাটে।
মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ৩২ রান যোগ করে আরেকটি প্রতিরোধ গড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেটি ভাঙেন মিচেল স্যান্টনার। দারুণ সব শট খেলে ২ ছয়ে ১৭ বলে ২০ রানে পৌঁছেছিলেন মোসাদ্দেক। তাকে অ্যান্ডারসনের ক্যাচ বানিয়ে রানের গতিতে আরেকবার লাগাম টানেন স্পিনার স্যান্টনার।
বেশিক্ষণ টেকেননি অধিনায়ক মাশরাফিও। হুইলারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফুলটস বলে ক্যাচ দিয়েছেন ১ রানে থাকার সময়। শেষদিকে নুরুল হাসান ১ চারে ৭ ও রুবেল হোসেন ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে অভিষেকেই আলো ছড়িয়েছেন লোকি ফার্গুসেন ও বেন হুইলার। ফার্গুসেন ৩২ রানে ৩টি ও হুইলার ২২ রানে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট গেছে হেনরি, স্যান্টনার ও কলিন গ্র্যান্ডোমের ঝুলিতে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
সহ-সম্পাদক : জুমা কবীর মীম
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও অনামিকা এ/৩৪ পূর্ব শাহী ঈদগাহ, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭২২১৮৮৫৫১, ০১৭৫৫৮৬৬২২২, ০১৭১২৫৪০৪২০, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by M-W-D