সিলেট ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০১৬
২৬১ জন নিখোঁজ সম্ভাব্য জঙ্গির তালিকা প্রকাশ:
বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মিডিয়া উইং থেকে ২৬১ জন নিখোঁজ ব্যক্তির একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর র্যাবের মিডিয়া বিভাগের ফেসবুক পাতায় ঐ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
তালিকার সাথে সংযুক্ত বার্তায় বলা হয় যে দেশব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে সাম্প্রতিক কালের নিখোঁজ ব্যক্তিদের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এসব ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেলে নিকটস্থ র্যাব ক্যাম্পে জানানোরও অনুরোধ করা হয়।
র্যাবের প্রকাশিত তালিকায় সম্প্রতি তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে যে তিনজন বাংলাভাষী তরুণকে কথা বলতে দেখা যায় তাদেরও নাম-পরিচয় রয়েছে।
তবে তালিকায় থাকা সবাই জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় সন্দেহভাজন কিনা এবিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
আইএসের ভিডিওচিত্রে যে তিনজন তরুণকে দেখা গিয়েছিল তাদের একজনের নাম তাহমিদ রহমান সাফি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তার বাবা একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার।
দ্বিতীয়জন তাউসিফ হোসেন এবং তার বাবা প্রতিরক্ষা ক্রয় বিভাগ ও র্যাবের একজন ঠিকাদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপরজন একজন প্রয়াত মেজরের ছেলে ডা: আরাফাত হোসেন তুষার।
তালিকায় থাকা ব্যাক্তিদের একটি বড় অংশ ঢাকার বাসিন্দা।
নামের পাশাপাশি তালিকায় অনেকের ঠিকানা ও পাসপোর্ট নম্বর থাকলেও ছবি রয়েছে খুব স্বল্পসংখ্যক।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের এই তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের প্রায় সবাই ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী।
বাংলাদেশে সম্প্রতি গুলশান এবং শোলাকিয়ায় দুটি সন্ত্রাসী হামলার পর দেখা যায় হামলাকারীরা দীর্ঘদিন যাবত নিখোঁজ ছিল। এরপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে বলা হয় যে দেশজুড়ে এমন অনেক তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
এদের সবার নাম ও জেলা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হল- ধুনটের মো. সাইদুল ইসলাম, মিরপুরের ফারহান হোসেন, মগড়াইগ্রামের ওমর ফারুক, পার্বতীপুরের রেজত রানা ফারুক সজল, ঝালকাঠির মো. মামুন হোসেন রায়হান হোসেন, মির্জাগঞ্জের বাদল, ইটবাড়িয়ার মো. মুসা গাজী, আমিনপুরের মো. বাদল মিয়া, মনিরামযুথের মো. আজাদ হোসেন, গাইবান্ধার মো. সোহেল রানা, বগুড়ার সুজন, সাতক্ষীরার রওশন আলী কাজী, নোয়াখালীর মো. ফিরোজ মিয়া ব্যাপারী, ঝালকাঠির মো. জাহাঙ্গীর আলম, আশুলিয়ার আমান উল্লাহ আশিক, মানিকগঞ্জের মো. ইউসুফ আলী, কুড়িগ্রামের মো. আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার মো. মেহেদী হাসান, রাজলক্ষ্মীর মো. শামীম রেজা, ঢাকার মো. রিহাব, ঢাকার মো. রিয়াদ, ঢাকার রোমিও, ঢাকার সাগর, গ্রীনরোডের তেহজীব করিম, বাড্ডার মো. সাব্বির হোসেন শুভ, ভাটারার মো. সাজাদ রউফ, আদাবরের মো. মাহমুদুল আহসান রাতুল, যশোরের রাহাত বিন আবদুল্লাহ, বি-বাড়িয়ার মো. ফিরোজ মিয়া, অজ্ঞাত সোহাগ মিয়া, খুলনার সাব্বির, কলাবাগানের মাহমুদুল রহমান কাজল, কক্সবাজারের আদনান, হবিগঞ্জের মো. মঈন উদ্দিন, বরিশালের মো. জুবায়ের হোসেন ফারুক, কুমিল্লার মো. জুয়েল, কুমিল্লার সিরাজুল ইসলাম, ফেনীর মোক্তার আহম্মেদ মাকসুদুর রহমান, উল্লাপাড়ার মো. রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের মো. মঞ্জু, পিরোজপুরের বাবুল জমাদার, নোয়াখালীর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, নরসিংদীর কমর উদ্দিন, সিরাজগঞ্জের মো. হাবিবুর রহমান, কিশোরগঞ্জের হাফেজ মো. আতিকুর রহমান, শাহজাহানপুরের সাইফুল ইসলাম শাকিল, নড়াইলের বেলাল মোল্যা, খিলগাঁওয়ের ওমর হাসান বাবু ওরফে শাহ জালাল, বনশ্রীর মো. আনিস হাওলাদার, ভুইয়াপাড়ার মো. রাসেল, চাঁদপুরের ছানাউল্যা, কুমিল্লার এসএম তাহসান, মগবাজারের মো. সিদ্দিক আলী, কুমিল্লার মো. জাহাঙ্গীর আলম, নারায়ণগঞ্জের মো. ইমরান, শিবগঞ্জের মো. বাদশা আলী, শিবগঞ্জের মো. সুমন, নাচোলের মো. মোস্তফা, চুয়াডাঙ্গার মো. সামসুল হক, ঝিনাইদহের মো. সোহেল, ঝিনাইদহের মো. মামুন রায়হান, ঝিনাইদহের মো. সোহেল রানা, তেঁতুলবাড়ীয়ার মো. দুরন্ত, ঝিনাইদহের মো. রাশেদুজ্জামান, ঝিনাইদহের মো. সজল খান, ঝিনাইদহের মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল, চরখাজুরার মো.ুাজেদুল হক, কালিগঞ্জের মো. আবু সাইদ, ঝিনাইদহের মো. হাসান আলী, মহেশপুরের মো. আ. সালাম, হরিণাকুণ্ডুর মো. আতিয়ার রহমান, শৈলকুপার মো. মাসুম আলী, ঝিনাইদহের মো. শফিকুল ইসলাম, সাতগাছির মো. মজিবর খা, ঝিনাইদহের মো. উজ্জ্বল হোসেন, শৈলকুপার মো. নাইম হোসেন, ঝিনাইদহের মো. ওয়াসিম আকরাম, ঝিনাইদহের মো. রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহের মো. রফিকুল ইসলাম, ঝিনাইদহের মো. তোতা, সাতক্ষীরার মো. রাশেদ গাজী, চুয়াডাঙ্গার মো. ফরহাদ হোসেন, চট্টগ্রামের শামছুল আলম বাবুল, চট্টগ্রামের আজিউর রহমান, চট্টগ্রামের সানাউল্ল্যাহ ইমতিয়াজ, কুমিল্লার আবদুর রহিম, চট্টগ্রামের মো. শাহজালাল শামীম, চট্টগ্রামের মো. মামুন, চট্টগ্রামের আবু তাহের, সাদুল্যাপুরের মো. মিন্টু মিয়া, ফেনীর মো. সাখাওয়াৎ, ফেনীর সাজ্জাদ হোসেন পারভেজ, মিরপুরের মনোয়ার হোসেন সবুজ, ফেনীর কাজি মহিবুল ইসলাম, ফেনীর ওমর ফারুক, কুমিল্লার মো. ইসাফিল, রাজশাহীর আশিক, ফেনীর রাশেদ, ফেনীর তাইফুল ইসলাম, ফেনীর রেজাউর রহমান রাজু, চট্টগ্রামের জানে আলম, চট্টগ্রামের আজিজুর রহমান, দেওয়ানহাটের ফরিদুল হক, কক্সবাজারের রাশেদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের মোজাফফর হোসেন বাবু, চট্টগ্রামের সুজন, চট্টগ্রামের জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রামের শাহজাহান, চট্টগ্রামের ফয়সাল, চট্টগ্রামের হাসান কাউসার, চট্টগ্রামের মিলাদ, চট্টগ্রামের ডাক্তার ইমরান হোসেন, চট্টগ্রামের আসিফ ইকবাল, কুমিল্লার মানিক হোসেন, ভোলার মো. সবুজ, নোয়াখালীর মো. জুয়েল, চট্টগ্রামের মো. আবু ছালেহ রাসেন, চট্টগ্রামের মো. রাজু, কুমিল্লার ওমর ফারুক, চট্টগ্রামের নুরুল হুদা, বি-বাড়িয়ার এনামুল হক সোহেল, ফেনীর মো. রিয়াজ, সিলেটের শামীম আহমদ, সিলেটের মো. তাজুল ইসলাম রুনেল, নারায়ণগঞ্জের মো. জাকির হোসেন, ঢাকার সাদমান হোসেন পাপন, মুন্সীগঞ্জের মো. মোতালেব হোসেন, কুষ্টিয়ার মো. মারজুক হায়দার জাহিন, কুষ্টিয়ার মো. মিন্টু শেখ বৈরাগী ওরফে মিন্টু খা, কুষ্টিয়ার মো. মহিদুল ইসলাম, পাবনার মো. রফিক মোল্যা, টাঙ্গাইলের মো. আব্দুল্লাহ, দিনাজপুরের একেএম সিয়াম, রংপুরের মো. শামীম মিয়া, রংপুরের শায়েস্তা খান, রংপুরের মো. রেজোয়ানুর রহমান, রংপুর সেনানিবাসের মো. সাঈদ হোসেন, রংপুরের সাব্বির আহাম্মেদ আনন্দ, রংপুরের মো. রেজাউল করিম, রংপুরের মো. ইকবাল হোসেন, রংপুরের মো. সাদ্দাম হোসেন, রংপুরের মো. নজরুল ইসলাম, হবিগঞ্জের মো. নাহিদুল ইসলাম ইমন, কিশোরগঞ্জের মো. রিপন মিয়া, কিশোরগঞ্জের মো. রহমত উল্লাহ, রায়পুরার শাহাজউদ্দিন, কিশোরগঞ্জের মো. আজিজুল হক, কিশোরগঞ্জের মো. নাহিদ ওরফে নিপু, কিশোরগঞ্জের মো. মান্নান, কিশোরগঞ্জের মামুন মিয়া, কিশোরগঞ্জের মো. কাউসার আহমেদ সৌরভ, কিশোরগঞ্জের আল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের মো. ছোবহান মিয়া, ঢাকা সেনানিবাসের আফিফ মানসিফ চৌধুরী, ঢাকার আহমেদ আজওয়াদ ইমতিয়াজ তালুকদার (অমি), ঢাকা সেনানিবাসের শামীম রেদওয়ান, ঢাকার জুনুন শিকদার, রাজবাড়ীর মো. শফিউল ইসলাম ওরফে প্রিন্স ওরফে কম্পিউটার নাইম, ঢাকার মইনউদ্দিন শরীফ, ফেনীর মো. রেদোয়ানুল আজাদ রানা, ঢাকার আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আব্দুল্লাহ, সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরী, চট্টগ্রামের আসিফ আদনান, বি-বাড়িয়ার মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি, গাজীপুরের মো. মুহিবুর রহমান, ঢাকার তাহমিদ রহমান সাফি, বনানীর তাউসিফ হোসেন, ঢাকার ডা. আরাফাত হোসেন তুষার/নাহিদ রেজা তুষার, চট্টগ্রামের মো. নিয়াজ মোর্শেদ রাজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নজিবুল্লাহ আনসারী, ঢাকার মো. আশেকুর রহমান, ঢাকার শেহজাদ রউফ ওরফে অর্ক, ঢাকার তৌফিক হোসেন খান, ঢাকার ওয়াকি চৌধুরী, ঢাকার তাওসিফ হোসেন, বাড্ডার জুনায়েদ খান, ধানমণ্ডির জুবায়েদুর রহিম, লক্ষ্মীপুরের এটিএম তাজউদ্দিন, মিরপুরের আশরাফ মোহাম্মদ ইসলাম, কুমিল্লার মো. জহির ইসলাম চৌধুরী, কুমিল্লার আব্দুল্লাহ ইবনে সিরাজ, বরগুনার বেল্লাল হোসেন, ঝিনাইদহের বাপ্পি, নীলফামারীর মো. রহমতুল্লাহ, চট্টগ্রামের আসিফউদ্দৌলা আসিফ, রসুলপুরের আব্দুল্লাহ, ফেনীর মো. ফোরকান চৌধুরী, চাঁদপুরের সোহানুর রহমান, ফতুল্লার একেএম মেহেদী হাসান, বাহাদুরপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম, ঢাকার মো. জুলহাস শেখ, নীলফামারীর মো. রহমতুল্লাহ, কুষ্টিয়ার বাদল, চাঁদপুরের মোয়াজ্জেম হোসেন, ইন্দিরা রোডের মো. আবদুল হান্নান, কুড়িগ্রামের মফিজুর রহমান, শ্যামনগর গ্রামের মোসাজাদ হোসেন, কক্সবাজারের খাইরুল আমিন ওরফে পুতিক্যা, সিলেটের মো. ছাদিকুর রহমান জুবের, বাঁদুড়তলার মো. খোরশেদ আলম, জগন্নাথপুরের সৈয়দ জাহাঙ্গীর মিয়া, রসুলপুরের মো. আবির হোসেন, টাঙ্গাইলের মো. হৃদয়, মাদারীপুরের শাহিন, লালমনিরহাটের হাফিজ মাহমুদ মিলন, ফরিদপুরের মো. রবিউল, ফরিদপুরের মো. আল আমিন, চাঁদপুরের সাইফুল ইসলাম নোমান, ঝিনাইদহের ওয়াফিল, বাঁদুড়তলার মো. খোরশেদ আলম, কালুয়াখলার মো. ইমরুল, সিলেটের মো. ছাদিকুর রহমান জুবের, টেকনাফের মো. ইউসুফ, চাঁদপুরের সোহানুর রহমান, চাঁদপুরের মো. ইয়াসিন খান, মিরসরাইয়ের জরুল ইসলাম, যশোরের আমানউল্লাহ, যশোরের কামরুল জামান, যশোরের কামাল হোসেন, যশোরের সারাত আলী, যশোরের হাসানুর রহমান, যশোরের ইকবাল হোসেন, যশোরের তহিদুল ইসলাম, যশোরের পীর বক্স, যশোরের তপন, যশোরের শাহ আলম, যশোরের হাসান আলী, যশোরের ফারুক হোসেন, যশোরের সুমন হোসেন, যশোরের মাসুদুর রহমান, যাত্রাবাড়ীর আবু মুসা, ঢাকার মো. মোস্তাহার, যাত্রাবাড়ীর মো. হাবিবুলুল্লাহ, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. নুরুজ্জামান আরিফ, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. কামরুজ্জামান টুটুল, ঢাকার মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান, ঢাকার ইব্রাহিম হাসান খান।
র্যাবের নিখোঁজ তালিকায় রয়েছে ডাক্তার, প্রকৌশলী ও পাইলটদের নাম
র্যাব ২৬২ জন নিখোঁজের যে তালিকা প্রকাশ করেছে সেই তালিকায় ডাক্তার, প্রকৌশলী, পাইলটও রয়েছে। এছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছে, গানের শিল্পী, পোশাক শ্রমিক, রাজমিস্ত্রী ও মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৯টি পেশার মানুষ। এসব নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।
বুধবার (২০ জুলাই) মধ্যরাতে এই তালিকা প্রকাশ করে র্যাব। এদিকে র্যাব আরও জানিয়েছে ওই তালিকার একজন ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছে।
মো. মাহমুদুল হাসান রাতুল (২৩)। বাবার নাম রওশন আলী খান। সে পরিবারের সঙ্গেই রাজধানীর আদাবর থাকতেন। নটরডেম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে সে গত বছরের ১৯ জুলাই নিখোঁজ হয়। ওই বছরের ২১ জুলাই তার বিষয়ে আদাবর থানায় একটি জিডি হয়। আজ পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রকৌশলী রাহাত বিন আব্দুল্লাহ। বাবার নাম শেখ আব্দুল্লাহ। তিনি যশোর পলিটেকনিক্যাল থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা শেষে করেন। পরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি করার জন্য ভর্তি হন। ইন্টার্নশিপ না করেই সেও নিখোঁজ। এবিষয়ে গত ১৮ জুন মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
কওমি মাদরাসার ছাত্র মোস্তাফা কামাল (২৬)। গত ছয়মাস আগেও সে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেছে। গত ৬ জুলাই থেকে সে নিখোঁজ। এই ঘটনায় এখনও কোনও জিডি হয়নি। তার গ্রামের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জের নাচল উপজেলায়।
বাদশাহ আলী (২৬)। তার গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ। বাবার নাম মতিউর রহমান। সে পেশায় রাজমিস্ত্রী। গত ২২ এপ্রিল সে নিখোঁজ হয়। এই ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
র্যাব প্রকাশিত তালিকা অনুসন্ধান করে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ হলেও এদের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) থানা গুলোতে বেশি জিডি হয়েছে। জিডির সময়কাল ২০১৫ ও ২০১৬ সালের সাম্প্রতিক মাস। তবে বেশিরভাগ নিখোঁজের জিডি চলতি বছরেই দায়ের করা হয়েছে।
র্যাব নিখোঁজের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে আছে, কোনও ব্যক্তির আলোকচিত্র, সর্বশেষ তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর, কারও কারও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরও নাম প্রকাশ করা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে যারা জিডি করেছে তাদেরও নাম প্রকাশ করা হয়েছে। যে সব থানায় জিডি করা হয়েছে, ওই থানার তদন্তকারীর মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়েছে তালিকায়। প্রকাশ করা হয়েছে নিখোঁজদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার তিনজন বাংলাদেশি ও ১৭ বিদেশি নাগরিক নিহত হন। এছাড়াও জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত হয়। এরপর ঈদের দিন শোলাকিয়ার ঈদগাহে হামলার ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হন।
এসব হামলায় অংশগ্রহণকারী জঙ্গি সদস্যরা প্রত্যেকেই বাসা ও পরিবার থেকে ছয় মাস বা এক বছর আগে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল বলে পরর্তীতে জানা যায়। এরপর নিখোঁজদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করে। তারা নিখোঁজদের পরিবারকে স্থানীয় থানায় জিডি করার অনুরোধ করেন।
এরপর নিখোঁজদের পরিবারগুলো নিজেরাই স্থানীয় থানায় জিডি করেন। যা থেকে সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা প্রকাশ করল র্যাব। পুলিশের কাছেও এধরণের একটি তালিকা রয়েছে।
কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেওয়া নিখোঁজ সংবাদই নয়, দেশের বেশকিছু জেলায় নিখোঁজ হওয়ার আরও খবর মিলছে। এরমধ্যে কেবল নাটোরে গত ছয় মাসে ২৪ জনসহ মোট ২৮ তরুণ নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ২১ বছর।
নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী বলছেন, শনিবার পর্যন্ত পুলিশ নাটোর জেলায় ৪৪ জন তরুণ নিখোঁজ হওয়ার তথ্য পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৮ জনের সন্ধান চেয়ে জিডি করেছেন স্বজনরা। জিডি হওয়া তরুণদের মধ্যে ২৪ জন চলতি বছর এবং ৪ জন গত বছর নিখোঁজ হয়।
এদিকে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তথ্য দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষমন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘কোনও উপজেলার কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কোনও কারণ ছাড়া ১০ দিনের বেশি নিখোঁজ থাকলে পরিবারকে জানাতে হবে। পরিবার থেকে কোনও উত্তর না দিতে পারলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা অফিসারকে জানাতে হবে। তিনি মন্ত্রণালয় জানাবেন।’
এছাড়া গত সোমবার বিকালে বগুড়ার দুটি উপজেলায় র্যাবের নেতৃত্বে পুলিশ ও বিজিবি’র যৌথ অভিযান শেষে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘কোনও জঙ্গি সংগঠন থেকে কোনও ব্যক্তি বের হয়ে এসে তথ্য দিলে তাকে দশ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কাউকে ধরিয়ে দিলে তাকে দেওয়া হবে পাঁচ লাখ টাকা।’
এর আগে খোঁজ পাওয়া যায়, এক বছর ধরে ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রোকন উদ্দিন ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে রবিবার রাতে রামপুরা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ঐ চিকিত্সক পরিবার তুরস্ক যাওয়ার পর আর দেশে ফেরেননি। পুলিশ ওই পরিবারের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছে। মালিবাগে মাটির মসজিদের পাশে ৪১১/বি নম্বর সাত বাড়িতে তারা থাকতেন।
গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর ১০ যুবকের সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চায় তাদের পরিবার। এরপর গতকাল রবিবার আরও দশজনের তালিকা গণমাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এই দশজনের মধ্যে তিনজন নারী রয়েছেন। এদের একজন রমিতা রোকন। কুড়িবছরের রমিতার ফেসবুক পেজে শেষ পোস্টটি গতবছর জুলাই মাসের।
গুলশানে হামলাকারীদের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর অভিভাবকরা জানতে পারেন, হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তাদের সন্তানেরা কোন পথে গিয়েছিল। তবে ওই ঘটনার পর অভিভাবকরা অভিযোগ করেছিলেন নিখোঁজ হিসেবে সাধারণ ডায়েরি করেও ফল পাওয়া যায়নি।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : মোঃ আফছর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : উজ্জ্বল চৌধুরী।
মস্তাক আহমদ পলাশ কর্তৃক নিউ বর্ণমালা অফসেট প্রেস, রাজা ম্যানশন, জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত।
ইমেইল : sylheterdinkalnews@gmail.com,
ফেইসবুক পেইজ : The Daily Sylheter Dinkal ০১৭১২৫৪০৪২০, ০১৭১১৯৮৪০৬৫, ০১৭১৮৫৩৮০৪৫ , ০১৭১১-৩২৬০৯১, শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by best-bd